বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত একাধিক মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ১৭ জন আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) প্রিজনভ্যানে করে তাদের আদালতে নেওয়া হয়।
এর মধ্যে রয়েছে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও মরদেহ পোড়ানো, এবং লক্ষ্মীপুরে পাঁচজনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া পৃথক তিনটি মামলা।
আবু সাঈদ হত্যা মামলা:
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। মামলার তদন্তে উঠে এসেছে, সাবেক এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় সরাসরি গুলিতে জড়িত ছিলেন। প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশসহ আরও অনেকে সহায়তা ও উসকানি দিয়েছেন।
গত ৩০ জুন এ মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল ২৬ পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার চার আসামিকে হাজির করা হয়।
আশুলিয়া হত্যাকাণ্ড ও লাশ পোড়ানো মামলা:
গত ২ জুলাই আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা করে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ট্রাইব্যুনাল ১৭৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র আমলে নেয়। সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়, যাদের মধ্যে আটজন পলাতক।
পুলিশ এ মামলায় সাতজনকে আদালতে হাজির করে। তারা হলেন—ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি এএফএম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক ও কনস্টেবল মুকুল।
লক্ষ্মীপুরে গণহত্যা মামলা:
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় লক্ষ্মীপুরে পাঁচজনকে হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় তিন আসামিকে হাজিরের নির্দেশ দেন আদালত। তারা হলেন—লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন জাবেদ ও জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন আলম।
আদালতের কার্যক্রম:
এই তিন মামলার শুনানি ও আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আব্দুস সোবহান তরফদার, আব্দুস সাত্তার পালোয়ান এবং বি এম সুলতান মাহমুদ।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০১







