মোঃ নাজমুল হুদা, জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান: পার্বত্য বান্দরবান জেলায় অবৈধভাবে পাহাড় কাটার অভিযোগে ভেকু ও ডাম্প ট্রাকসহ মোহাম্মদ ফারুক (৪৮) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আর এ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে একাধিক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। যা ঘিরে সাংবাদিক মহলে চরম ক্ষোভ ও নিন্দা তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে বান্দরবান সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের লেমুঝিরি এলাকায় এ অভিযান চালায় পুলিশ। আটক মোহাম্মদ ফারুক বান্দরবান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও মৃত বদিউর রহমানের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ আলী, মো. মামুন ও মোহাম্মদ ফারুকের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে বালাঘাটা-লেমুঝিরির লক্ষীপদ গোধা এলাকায় রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে মাটি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। অভিযোগ রয়েছে, এই জমির মালিক সাবেক কৃষকলীগ নেতা প্রজ্ঞাসা বড়ুয়া পাপন। তবে অভিযুক্তরা নিজেদের বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন, যার ফলে সাধারণ কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
এই পাহাড় কাটার খবর পেয়ে ‘আমার সংবাদ’ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ফারুক আহম্মেদসহ অন্তত ১২ জন স্থানীয় সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে কথিত বিএনপি নেতা পরিচয়ের দুষ্কৃতিকারীরা তাদের বাধা দেয়। প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত মোহাম্মদ ফারুক ও তার সহযোগীরা ফারুক আহম্মেদ ও আরও এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়।
বান্দরবান সদর থানা পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পাহাড় কাটায় ব্যবহৃত একটি ভেকু, একটি ডাম্পার ট্রাক এবং আরেকটি ডাম্প ট্রাকের কাগজপত্র জব্দ করে। এ সময় মোহাম্মদ ফারুককে আটক করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বান্দরবান সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এইচ এম সম্রাট সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটি শুধু সাংবাদিকদের ওপর নয়, সত্যের ওপর আঘাত। আমরা জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, অবৈধভাবে পাহাড় কাটার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পরিবেশ অধিদফতরের বান্দরবান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, “লেমুঝিরি এলাকায় পাহাড় কাটার ঘটনায় পরিবেশ অধিদফতর বাদী হয়ে একটি মামলা করছে।
উল্লেখ্য, অপর একটি সূত্র জানায়, বালাঘাটা এলাকার নির্মাণাধীন উপ-বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি ভরাট করতে নাজিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেন। অভিযোগ রয়েছে ওই জমি ভরাটে পাহাড় ও নদীর চর কাটা হচ্ছে দেধারছে। তাকে দুইবার ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত করা হয় এবং পরিবেশ অধিদফতর আরও দুটি মামলা হয়। তারপরেও তিনি বহাল তবিয়তে।







