বিশ্বব্যাপী কন্যাশিশুর জন্মের হার পুরুষের তুলনায় একটু বেশি হলেও, কিছু দেশ রয়েছে যেখানে নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে বেশি। একাধিক কারণে, বিশেষত আয়ুষ্কাল এবং অভিবাসনের প্রভাবে এই দেশগুলিতে নারীর অনুপাত পুরুষদের তুলনায় বেশি। সম্প্রতি জাতিসংঘের ‘পপুলেশন ডিভিশন’ এক প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে জানায়, মলদোভা, লাটভিয়া, আর্মেনিয়া এবং আরও বেশ কিছু দেশ এই চিত্র উপস্থাপন করছে। চলুন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কোথায় নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি।
১. মলদোভা
মলদোভা ইউরোপের এমন একটি দেশ যেখানে নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে বেশি (৫৩.৯৮%)। তবে দেশটিতে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য এখনও তীব্র, এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ পুরুষদের তুলনায় অনেক কম।
২. লাটভিয়া
লাটভিয়ায় নারীর সংখ্যা ৫৩.৬৮%। এখানে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এর কারণ পুরুষদের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি।
৩. আর্মেনিয়া
আর্মেনিয়ায় নারীর সংখ্যা ৫৩.৬১%, কিন্তু দেশটির পুরুষেরা বিদেশে কর্মসংস্থান খুঁজতে বেশি যায়। এর ফলে নারীদের সংখ্যা বাড়ছে, তবে কর্মক্ষেত্রে তাদের প্রবেশের সুযোগ কম।
৪. রাশিয়া
রাশিয়ায় ৫৩.৫৭% নারী, যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পুরুষের মৃত্যুহারের কারণে নারীদের সংখ্যা বেড়েছে। রুশ পুরুষেরা মদ্যপান ও আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি হওয়ায় আয়ুষ্কালও কম।
৫. ইউক্রেন
ইউক্রেনে ৫৩.৫০% নারী রয়েছে, এবং নারীদের গড় আয়ুষ্কাল পুরুষদের তুলনায় প্রায় ১০ বছর বেশি। এ কারণে দেশটিতে নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় বেশি।
৬. জর্জিয়া
জর্জিয়ায় নারীর সংখ্যা ৫৩.৪০%, এবং দেশটি অভিবাসনের ফলে এই অনুপাত বেড়েছে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি।
৭. বেলারুশ
বেলারুশে নারীর সংখ্যা ৫৩.৪০%, তবে লিঙ্গবৈষম্য এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের মজুরি পুরুষদের তুলনায় কম। সত্ত্বেও, গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির কারণে নারীর সংখ্যা পুরুষদের চেয়ে বেশি।
৮. লিথুয়ানিয়া
লিথুয়ানিয়ায় নারীর সংখ্যা ৫২.৮৫%, এবং নারীরা পুরুষদের তুলনায় ৯ বছর বেশি বাঁচে। শরণার্থী অভিবাসনও নারীদের সংখ্যা বাড়ানোর একটি কারণ।
৯. টোঙ্গা
টোঙ্গায় নারীর সংখ্যা ৫২.৫৯%, এবং পুরুষদের তুলনায় নারীদের গড় আয়ু প্রায় ৫ বছর বেশি। এছাড়াও, সমাজে পুরুষদের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই পার্থক্য সৃষ্টি করেছে।
১০. সার্বিয়া
সার্বিয়ায় ৫২.৫১% নারী রয়েছে, যেখানে নারীরা বৈষম্য এবং পারিবারিক সহিংসতার শিকার হলেও গড় আয়ুষ্কাল তাদের পুরুষদের তুলনায় বেশি।
বিশ্বের এই দেশগুলোতে নারীর সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কিছু বিশেষ সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত কারণ, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির জন্য চিন্তার বিষয় হতে পারে।