নারীদের জীবনযাত্রায় একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন হলো মেনোপজ বা মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া। সাধারণত ৪৫-৫০ বছর বয়সের পর এটি ঘটে বলে ধারণা করা হয়। তবে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক নারী ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সেই মেনোপজের প্রাথমিক লক্ষণ অনুভব করতে শুরু করেন। কিন্তু তারা বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে চিকিৎসা নিতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া হেলথ (UVA Health) এবং ফ্লো (Flo) নামের একটি স্বাস্থ্য অ্যাপের গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০-৩৫ বছর বয়সী নারীদের অর্ধেকেরও বেশি এই পরিবর্তনের মাঝারি থেকে তীব্র লক্ষণের মধ্যে দিয়ে যান। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, এই সমস্যা ৫০ বছর বয়সের আগে হয় না। ফলে তারা নীরবে কষ্ট পান এবং চিকিৎসা নেন না।
মেনোপজের আগের এই পর্যায়কে বলা হয় ‘শরীরের বদলের সময়’ বা মেনোপজে যাওয়ার প্রস্তুতির সময়। এ সময় শরীরে নানা রকম পরিবর্তন আসে, যেমন – অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত গরম লাগা, রাতে ঘুমের সমস্যা, উদ্বেগ বা হতাশা, ওজন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু অনেক চিকিৎসকও এগুলোকে তেমন গুরুত্ব দেন না।
গবেষণার সহ-লেখক ও নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জেনিফার পেইন বলেন, “মেনোপজ শুরুর আগের এই লক্ষণগুলো নিয়ে এখনো তেমন গবেষণা হয়নি। চিকিৎসকরাও অনেক সময় এগুলোকে তেমন গুরুত্ব দেন না। এই গবেষণার মাধ্যমে নারীদের অভিজ্ঞতা জানা সম্ভব হয়েছে এবং এটি চিকিৎসকদের ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে।”
এই গবেষণা ‘npj Women’s Health’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরের যে কোনো পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। যদি ৩০ বছর বয়সের পর কেউ ঘন ঘন মুড পরিবর্তন, ঘুমের সমস্যা, হট ফ্ল্যাশ (অতিরিক্ত গরম লাগা) বা মাসিক অনিয়মের মতো লক্ষণ দেখেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আগে থেকে সচেতন হলে অনেক ধরনের শারীরিক ও মানসিক কষ্ট এড়ানো সম্ভব হবে।