বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে মারাত্মকভাবে আহত এক নারীকে রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়েছে, ঘটনাটি বাংলাদেশের টেকনাফ বা কুমিল্লায় সংঘটিত একটি ধর্ষণ বা সহিংসতার। তবে, তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এটি আসলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি সাম্প্রতিক ঘটনার ভিডিও।
ভিডিওটির প্রকৃত উৎস
রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে একজন আহত নারীকে তাঁর পরিচয় ও অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায়। উত্তরে তিনি অস্পষ্টভাবে কিছু বলেন, যেখানে একজন ব্যক্তি ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার কথা উল্লেখ করেন।
এই সূত্র ধরে অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিন ও আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন শনাক্ত করে। জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের জয়নগরের বকুলতলা এলাকায়। ২০ জানুয়ারি রাতে ধানখেতের পাশে ইটের রাস্তায় এক নারীর ক্ষতবিক্ষত দেহ পাওয়া যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে খবর দিলে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়
রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের ভিশন এইটিন বাংলা ও নিউজ এইটিনের ইউটিউব চ্যানেল থেকে পাওয়া ভিডিওগুলো ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ছাড়া ভারতের রেখা পাত্র নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও একই ঘটনার আরেকটি ভিডিও পোস্ট করা হয়।
এই তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি পশ্চিমবঙ্গের একটি নারী খুনের ঘটনা, যা মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ বা সহিংসতা হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।
মিথ্যা প্রচারের প্রভাব
ভিডিওটি নিয়ে এমন অপপ্রচার দেশের ভেতরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এবং সামাজিক অস্থিরতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। রিউমর স্ক্যানার এ ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রচারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের মতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া যেকোনো সংবেদনশীল তথ্য যাচাই না করে শেয়ার করা উচিত নয়। কারণ, এ ধরনের অপপ্রচার সমাজে ভুল বার্তা দেয় এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করে।