যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি দাবানলে জ্বলছে। টানা পাঁচ দিন ধরে চলমান দাবানলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো ছয়টি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল, প্যাসিফিক প্যালেসেইডস, দিক পরিবর্তন করে নতুন এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলের সূত্রপাত ঘটে। এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দাবানলে পুড়ে গেছে প্রায় ১০ হাজার স্থাপনা এবং ধ্বংস হয়েছে ৩৫ হাজার একর এলাকা। আগুনের তীব্রতা বাড়ার আশঙ্কায় প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুষকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরও ১ লাখ ৬৬ হাজার মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।
দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পেছনে ‘সান্তা অ্যানা’ নামের ঝোড়ো বাতাস ভূমিকা রেখেছে। যদিও শুক্রবার রাতে বাতাসের গতি কমে এলেও প্যালেসেইডস দাবানল নতুন দিকে অগ্রসর হচ্ছে। লস অ্যাঞ্জেলেস ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা এরিক স্কট জানিয়েছেন, দাবানলটি পূর্ব দিকে ছড়িয়ে পড়ছে এবং ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস হেলিকপ্টার থেকে পানি এবং রাসায়নিক ব্যবহার করছে। প্রতিবেশী সাতটি অঙ্গরাজ্য, কেন্দ্রীয় সরকার ও কানাডা থেকেও সাহায্য এসেছে। তবে তীব্র দাবানল, ধোঁয়া এবং উচ্চ তাপমাত্রা উদ্ধারকাজে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।
জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সপ্তাহান্তে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে পারে। বাতাসের গতি কমে যাওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হবে। তবে আগামী মঙ্গলবার থেকে বাতাসের গতি আবার বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই ধ্বংস হওয়া বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। প্যাসিফিক প্যালেসেইডসের এক বাসিন্দা কেলি ফস্টার বলেন, “এটি আমাদের অনেক ভালোবাসার একটি বাড়ি ছিল।” অন্য এক বাসিন্দা ডেনিস ডস মন্তব্য করেন, “এখন সৃষ্টিকর্তাই আমাদের পথ দেখাবেন।”
এই দাবানলের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ থেকে ১৫০ বিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিষয়ক সংস্থা অ্যাকুওয়েদার। ধোঁয়ার কারণে বাতাস দূষিত হওয়ায় বাসিন্দারা শারীরিক ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আগামী ছয় মাসে লস অ্যাঞ্জেলেসের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনে মার্কিন সরকার শতভাগ অর্থায়ন করবে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষও দ্রুত পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে এই ভয়াবহ দাবানলের ক্ষত সারিয়ে উঠতে সময় লাগবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।