Friday, December 5, 2025

চড়া নিত্যপণ্যের বাজার সহসাই সুখবর মিলছে না

নিত্যপণ্যের বাজারে সুখবর নেই। প্রতিটি পণ্যে বাড়তি দাম অব্যাহত রয়েছে যশোরের বাজারে। দু-একটি বাদে সব ধরনের নিত্যপণ্য চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

তিন বছর ধরে প্রতিটি নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দরিদ্র থেকে ধনী কোনো ক্রেতার জন্যেই নিত্যপণ্যের বাজার এখন আর স্বস্তির জায়গা নেই। পছন্দ অনুযায়ী কে কবে বাজার করেছেন, তা ভুলে গেছেন। যশোরের বাজারে চাল, ডাল, আটা, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, আলুসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। চলতি সপ্তাহে শুধুমাত্র মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। তবে তাতে সন্তুষ্ট নন ক্রেতারা। সব ধরনের নিত্যপণ্য সহনীয় দামে বিক্রি হবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। সেই সাথে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা হওয়ায় পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশংকা ক্রেতাদের মাঝে। সপ্তাহের শুরুতে টানা বৃষ্টিতে যশোর শহরের বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বাড়তি দামে বিক্রি হতে থাকে। তবে গত দুইদিন বৃষ্টি না হওয়াতে সপ্তাহের শেষে কিছুটা কমেছে দাম। শুক্রবার শহরের বড়বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। যা সপ্তাহের শুরুতে বিক্রি হয়েছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে। অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। পটল, চাল কুমড়া ৩০ টাকা। ঝিঙে, কচুর মুখি, কাকরোল, ৬০ টাকা, কচুরলতি, বরবটি ৭০ টাকা, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ধুন্দল ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা, কাঁচকলা, শসা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা, ওল, বেগুন, উচ্ছে ৮০ টাকা, ফুলকপি, মুলা ৬০ টাকা, টমেটো একশ’ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা। আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

যশোর বড়বাজারের সবজি বিক্রেতা কিশোর সাহা বলেন, টানা বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে, তাই দাম কমছে না। আরেক বিক্রেতা রিয়াজ হোসেন বলেন, বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্য সবজির দাম কমে আসতে পারে। সুখবর নেই চালের বাজারে। প্রায় এক বছর ধরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। সে ধারাবাহিকতায় মোটা চালে বেড়েছে আরও দুই টাকা। প্রতি কেজি স্বর্না বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজিতে। চিকন চালে বাড়তি দাম অব্যাহত রয়েছে। আঠাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে। কাজললতা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। বাসমতি ৮২ থেকে ৯০ টাকা। নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাঁচড়া এলাকার মনিকা বর্মণ বলেন, আগে বাসমতি চাল নাজিরশাইলের চেয়ে কম দামে বিক্রি হতো। এখন বাসমতির দাম নাজিরশাইলকে ছাড়িয়ে গেছে। চাল ছাড়াও প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া।

মোল্লাপাড়ার স্বপন সাহা বলেন, ‘বন্যার কারণে যেন এখানে কোন পণ্যের দাম না বাড়ানো হয়, প্রশাসন যেন এটি খুব ভালোভাবে নজরদারি করে। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে, আমরা সে সুদিনের অপেক্ষায় আছি’। আরএন রোড এলাকার সাবরিনা সুলতানা বলেন, ‘শুধুযে সাধারণ ক্রেতা তাতো না, ধনীদেরও দেখি হিসাব করে বাজার করতে। গত তিনটি বছর ধরে সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে কি যাচ্ছে এটা শুধু তারাই জানে’।

অন্যদিকে চলতি সপ্তাহে কিছুটা কমেছে মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজিতে। দশ টাকা কমে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজিতে। ৩০ টাকা কমে লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজিতে। কমেছে দেশি মুরগির দামও। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। গরুর মাংস ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি। খাসির মাংস এক হাজার টাকা। ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা কেজিতে। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা হালিতে। সোনালী মুরগির ডিম ৫৬ টাকা। দেশি মুরগির ডিম ৬৪ টাকা। হাঁসের ডিম ৭০ টাকা। কোয়েল পাখির ডিম ১৪ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। কমেনি পেঁয়াজের দামও। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে। রসুন ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। আদা ২৮০ থেকে ৩৮০ টাকা। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য মশলাও। জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায়। এলাচ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫০০ থেকে চার হাজার টাকা কেজিতে। লবঙ্গ এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা। গোলমরিচ এক হাজার টাকা। দারুচিনি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা কেজিতে। বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা লিটার। মুগ ডাল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। মসুরের ডাল ১১০ থেকে ১৪৫ টাকা। ছোলার ডাল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। বুটের ডাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। খোলা আটা ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। প্যাকেট আটা ৫০ টাকা। চিনি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। লবণ ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অনলাইন ডেস্ক ।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর