যশোরের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। আজ রোববার বাদ জোহর বাঘারপাড়া উপজেলার যাদবপুর ঈদগাহ মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
পারিবারিকভাবে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে নুরুল ইসলাম ডায়ালাইসিসের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। শনিবার দুপুরে তিনি খুবই দুর্বল হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে মারা যান তিনি।
১৯৪৩ সালের ১৫ এপ্রিল যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নুরুল ইসলাম। বকতিয়ার বিশ্বাস বক্ত ও জবেদা খানম দম্পত্তির চার পুত্র সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ছাত্রজীবনে নুরুল ইসলাম বাম রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬২ সালে যশোরে এমএম কলেজের জিএস (সাধারণ সম্পাদক) নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর রাজনৈতিক দল ন্যাপে যোগ দেন। সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ১৯৬৬ সালে যশোর জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপরাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন নুরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি স্বাধীনতা উত্তরকালে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী যশোরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। নুরুল ইসলাম ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ (বাঘারপাড়া ও অভয়নগর) আসনে ন্যাপের কুঁড়েঘর প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠিত হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে যশোরের সেক্রেটারি (সাধারণ সম্পাদক) টু গর্ভনর করেন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে ওই রাতেই নুরুলকে গ্রেফতার করা হয়। ব্যক্তি জীবনে নুরুল ইসলাম ও শামছুন্নাহার দম্পত্তির চার পুত্র ও এক কন্যা। বড় ছেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর কামরুল ইসলাম। তিনি সপরিবারে লন্ডনে বসবাস করেন। মেজ ছেলে প্রয়াত মনিরুল ইসলাম তুহিন। সেজ ছেলে যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরিফুল ইসলাম লিংকন ও ছোট ছেলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর স্কোর্ডন লিডার পাইলট সিরাজুল ইসলাম। নুরুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে ফাতেমাতুজ্জোহরা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগে পিএইচডি করছেন।
রাতদিন সংবাদ/এস বি-০২







