Friday, December 5, 2025

রাজধানীতে চার দফা দাবিতে হরিজন সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ সমাবেশ

বিশেষ সংবাদ– বেআইনি উচ্ছেদ অভিযান, সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন রাজধানীর বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনির বাসিন্দারা। শনিবার (১৩ জুলাই) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব দাবি জানিয়েছেন হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন। এ সময় দুই শতাধিক হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রাজধানীর বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনির বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে কলোনির জমিতে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১০ জুলাই বিনা নোটিশে উচ্ছেদ অভিযান চালায় ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। ফলে বাস্তুহারা হয়ে যায় কলোনির প্রায় ৫০টিরও বেশি পরিবার।

উচ্ছেদ অভিযানের সময় মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে ৩৩ নম্বর কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনের নেতৃত্বে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ১৬ জন আহত হয়। এ ঘটনার পর থেকে মিলনজিল্লা এলাকার মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। এর প্রতিবাদে চার দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হরিজন সম্প্রদায়।

বিক্ষোভ সমাবেশে হরিজন সম্প্রদায়ের বক্তারা বলেন, মিরনজিল্লার ইতিহাস প্রায় ৪০০ বছরের বেশি পুরনো। যে মানুষগুলোর অমানবিক পরিশ্রমের ফলে এই নগর তৈরি হয়ে আজকের ঢাকা। তারাই আজ এই নগরে বহিরাগত-অস্থায়ী বাসিন্দার তকমা পাচ্ছে। তাদের এই দুর্যোগের সময় জনস্বার্থে উচ্চ আদালতে মামলা করে পাশে দাঁড়ান কয়েকজন আইনজীবী। ফলে উচ্চ আদালত প্রথম দফায় গত ১০ জুন এই উচ্ছেদ কার্যক্রমকে এক মাসের স্থিতি আদেশ দেন।

তারা আরও বলেন, এক মাস পূর্ণ না হতেই গত ৯ জুলাই ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ আবার উচ্ছেদ অভিযানের নোটিশ দেয়। আর ১০ জুলাই করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান উচ্ছেদ অভিযানের লক্ষ্যে স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে দুই শতাধিক ক্যাডার বাহিনী নিয়ে কলোনিতে ঢুকে এক চরম আতঙ্ক ছড়ায়। কলোনির মানুষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই কাউন্সিলরের ক্যাডার বাহিনী তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র, ইট, লোহার রড ও চাপাতি নিয়ে হামলা চালায়।

হরিজন সম্প্রদায়ের চার দাবি
১. হামলার সঙ্গে জড়িত সব সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। হরিজনদের বিরুদ্ধে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনের করা সব মিথ্যা ও হয়রানি মামলা তুলে নিতে হবে।

২. ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।

৩. ৪০০ বছরের পুরনো বসতি কোনোক্রমেই অবৈধ নয়, তাই সব ধরনের উচ্ছেদ পরিকল্পনা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।

৪. মিরনাজল্লার ভূমি মিরনজিল্লাবাসীদের। এই জমির মালিকানা মিরনজিল্লার বাসিন্দাদের নামে। বাকি সব দলিল তুলে দিতে হবে।

রাতদিন-ডিজিটাল ডেস্ক/জয়

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর