রাজধানীর বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনির বাসিন্দাদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আউয়াল হোসেনের কর্মীদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১০ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে পুরান ঢাকার আগা সাদেক রোডের পাশে মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে হরিজন সম্প্রদায়ের শিশুসহ অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। আহতরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মিডফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি।
এই ঘটনার পর মিরনজিল্লা এলাকায় থমথমে পরিস্থিত বিরাজ করছে। হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের ধারণা, তাদের ওপর আবারও আক্রমণ হতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা ধারালো দা, চাপাতি, লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। হরিজন পল্লীর ঘর-বাড়ি, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় হরিজন কলোনির অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, বিকাল পর্যন্ত হরিজন সম্প্রদায়ের অন্তত ১৬ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা হলেন- সুবল লাল (৩৬), রুমন দাস (৩৫), উদয় (২০), ঋষি কুমার (১৯), বিরুল দাস (২৪), বিমল দাস (৪০), করুন দাস (৩৫), শিবলাল (৪০), প্রশান্ত (১৩), নিরঞ্জন দাস (৭৫), নিলয় দাস (১৮) ও দীপ্ত দাস (১০)।
এ সময় হরিজনরা আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা হামলা চালালে আহত হন কাউন্সিলরের সমর্থক ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মকবুল হোসেন (৫০), আওয়ামী লীগ কর্মী মো. নাঈম (৪০), মো. রুবেল (৩৮) ও রুবেল গাজী (৩৫) সহ কয়েকজন।
জানা যায়, মেয়রের কথার ব্যক্তব্যের প্রতিবাদ ও তাদের চারশ বছর ধরে বসবাস করা কলোনি রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের পরই এই হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা বলেন, আগে মেয়র অনেকগুলো মিথ্যা কথা বলেছেন। আমাদের এখানে নাকি মাদক ব্যবসা হয়, কিশোর গ্যাং তৈরি হয়- এমন মন্তব্য করেন তিনি। সম্প্রতি চারশ পরিবারের ৬০ পরিবারকে একটি ভবনে পুনর্বাসন বা আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করেন। এই ৬০ পরিবারের সদস্যরা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অফিসে চাকরি করেন। গতকাল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তাদের ঘর বুঝিয়ে দিতে এলে তারা ঘর নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হয়েছে।
হরিজনদের পক্ষে রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি বলেন, আমরা মিরনজিল্লা পল্লীর হরিজন সম্প্রদায়ের ভূমি রক্ষা কমিটির আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করছিলাম। সংবাদ সম্মেলন শেষে ম্যাজিস্ট্রেট ও কাউন্সিলর আউয়াল হোসেন হরিজন পল্লীতে আসেন। এ সময় হরিজনদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। তখন কাউন্সিলরের লোকজন পল্লীর ভেতরে হামলা চালিয়ে হরিজনদের আবাসিক ঘর-বাড়ি ও মন্দির ভাঙচুর করে।
হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের ওপর হামলার বিষয়ে ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রাতদিন-ডিজিটাল ডেস্ক:-







