Saturday, April 27, 2024

এমভি আবদুল্লাহর ওপর ভারত কড়া নজর রাখছে : হরি কুমার

- Advertisement -

সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ওপর ভারত কড়া নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরি কুমার।

শনিবার দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

একইসঙ্গে ভারত মহাসাগর অঞ্চলটি আরও নিরাপদ করতে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি পদক্ষেপ নেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া ভারতের পতাকাবাহী কোনও জাহাজ হুথিদের হামলার শিকার হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (২৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনী নিরাপদ এবং আরও সুরক্ষিত ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিশ্চিত করার জন্য ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ নেবে বলে বাহিনীটির প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরি কুমার জানিয়েছেন। গত ১০০ দিনে দেশটির নৌবাহিনীর গৃহীত জলদস্যুতা বিরোধী এবং অন্যান্য সামুদ্রিক নিরাপত্তা অভিযানের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শনিবার তিনি একথা বলেন।

নয়াদিল্লির নবনির্মিত নৌসেনা ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় নৌবাহিনীর এই প্রধান (সিএনএস) বলেন, ‘কোনও ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজ’ সমুদ্রে হুথিদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়নি।

অ্যাডমিরাল কুমার বলেন, ‘আপনারা যেমন জানেন, এমভি আবদুল্লাহ নামের একটি জাহাজ হাইজ্যাক করে সোমালিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাই আমরা এখন এটির ওপর সতর্ক নজর রাখছি। মূলত এটিকে এখন জলদস্যু জাহাজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে নাকি (অন্যকোনও জাহাজ ছিনতাইয়ের জন্য এটিকে) জলদস্যুদের মাদার জাহাজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। তাই, সোমালি জলসীমায় চলাচলকারী জাহাজগুলোর ওপর আরও ঘনিষ্ঠ নজরদারি করতে চলেছি আমরা।’

এনডিটিভি বলছে, সামুদ্রিক নিরাপত্তা অভিযানের অংশ হিসেবে ভারতের নৌবাহিনী জলদস্যুতা বিরোধী, ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী এবং ড্রোন বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। সংবাদ সম্মেলনের আগে দেশটির নৌবাহিনীর কর্মকর্তার পিপিটি প্রেজেন্টেশনে দেওয়া তথ্য অনুসারে, ‘অপারেশন সংকল্প’-এর এসব অভিযানে ১১০ জনের প্রাণ — ৪৫ জন ভারতীয় এবং ৬৫ জন বিদেশি নাগরিক — রক্ষা করা হয়েছে।

প্রেজেন্টেশনে আরও উল্লেখ করা হয়, গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৫৭টি ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ ৯০টিরও বেশি সামুদ্রিক ঘটনা ঘটেছে; এছাড়া জলদস্যুতা, ছিনতাই বা সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডসহ ৩৯টি ঘটনা ঘটেছে।

এর আগের দিন সোমালিয়ার উপকূলে সাম্প্রতিক অভিযানে ধরা পড়া ৩৫ জন জলদস্যুকে নিয়ে আইএনএস কলকাতা মুম্বাই পৌঁছায় বলে নৌবাহিনী জানিয়েছে। এই জলদস্যুদের বিরুদ্ধে ভারতীয় আইন বিশেষ করে মেরিটাইম অ্যান্টি-পাইরেসি অ্যাক্ট, ২০২২-এর অধীনে আরও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুম্বাই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ দুপুরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহাজের ইন্টারনেট সংযোগও। ছিনিয়ে নেওয়া হয় নাবিকদের কাছে থাকা মোবাইল, সঙ্গে থাকা ডলার।

জাহাজটি ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। নাবিক ও ক্রুসহ জাহাজটিতে ২৩ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।

তবে ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটি ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে জলদস্যুরা। জাহাজটি ওই সময় সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল।

‘এমভি আবদুল্লাহ’ আগে ‘গোল্ডেন হক’ নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি এই বাল্ক ক্যারিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার।

-অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত