Monday, April 29, 2024

বড় জাহাজ ভেড়াতে মোংলা বন্দরে ১৫৫০ কোটি টাকার প্রকল্প

- Advertisement -

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা। পদ্মা সেতু চালুর পর এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বেড়েছে কয়েক গুণ। তবে বন্দরের ড্রাফট বা পানির গভীরতা মাত্র সাত মিটার হওয়ায় বড় জাহাজ ভিড়তে পারছে না। এতে গভীর সমুদ্রে জাহাজ নোঙর করে ছোট লাইটার জাহাজ দিয়ে মালামাল খালাস করতে হচ্ছে। এতে সময় ও ব্যয় দুটিই বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে মোংলা বন্দরের ড্রাফট বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ জন্য নেওয়া হয়েছে এক হাজার ৫৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প। যার আওতায় জেটির ড্রাফট বাড়িয়ে ৯ দশমিক পাঁচ থেকে ১০ মিটার করা হবে। ফলে সহজেই বড় আকারের মাদার ভেসেল জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারবে। প্রকল্পের নাম ‘মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিং’।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো প্রস্তাবে দেখা গেছে, পারফরম্যান্স বেজড সংরক্ষণ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের নাব্য সংরক্ষণ করা এবং পশুর চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে পাঁচ বছরে কম বেশি ৩৪৭ দশমিক ৫০ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হবে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, ‘ঢাকার সবচেয়ে নিকটতম বন্দর মোংলা। এ জন্য পাঁচ বছর মেয়াদের একটি পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছি। সে ধারাবাহিকতায় আমরা আধুনিক ড্রেজার কিনবো। ফলে মোংলা বন্দরের আশপাশের ড্রাফট সাড়ে ৯ থেকে ১০ মিটার হবে’।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, মোংলা বন্দর চ্যানেলে হারবার এলাকায় ৯ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার জাহাজ হ্যান্ডেল করার লক্ষ্যে ২০২০ সালে পশুর চ্যানেলের আউটার বারে ড্রেজিং করে কাঙ্ক্ষিত গভীরতা সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু পলি জমার কারণে গভীরতা কমায় আউটার বারে হারবার চ্যানেলে ৯ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হয়। এ এলাকায় অর্জিত গভীরতা ধরে রাখার জন্য রাজস্ব বাজেটে অনিয়মিতভাবে ড্রেজিং করা হচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানে আউটার বারে নাব্য বজায় রাখার লক্ষ্যে নিয়মিত সংরক্ষণ ড্রেজিং করা প্রয়োজন।

বন্দরের জেটিতে ৯ দশমিক ৫ থেকে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ‘মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ইনার বার এলাকায় ২৩ কিলোমিটার এলাকায় ৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফট অর্জনের লক্ষ্যে ২৩৭ দশমিক ৫৫ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং চলমান। এ কাজ চলতি বছরের জুনের মধ্যে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত আছে। এ এলাকায়ই অর্জিত নাব্য ধরে রাখার জন্য সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রয়োজন। এ প্রেক্ষাপটেই প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে মোংলা বন্দরের চাপ অনেকাংশে বেড়ে গেছে। কিন্তু বন্দরের আশপাশে ড্রাফট মাত্র সাত মিটার। ফলে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। এ জন্য মোংলা ঘিরে আমরা মেগা উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি বলেন, প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে-প্রকল্পের আওতায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় হবে পরামর্শক খাতে। এ ছাড়া দুই হাজার একর জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ কোটি, ১০ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বোট, ২৬৪ লাখ ঘনমিটার কাটার সাকশন ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং খাতে ব্যয় হবে ৮৯৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ৮৩ দশমিক ৫ লাখ ঘনমিটার ট্রেলিং সাকশন হুপার ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং খাতে ব্যয় হবে ৫১৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং ১৫ লাখ ঘনমিটার মাটির বেড়িবাঁধ নির্মাণ খাতে ব্যয় হবে ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

-অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত