Monday, April 29, 2024

অভয়নগরে ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্থানীয় কৃষকদের নানা অভিযোগ

- Advertisement -

সৈয়দ রিপন, অভয়নগর প্রতিনিধি- যশোরের অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পুড়াখালী,মথুরাপুর,কোদলা ও দেয়াপাড়া গ্রামের ব্লকে কর্মরত উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো: মহিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলা সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মাঠ পরিদর্শণ না করা, উপজেলা অফিসে মনগড়া ফসলের প্রদর্শণী প্লট নির্ধারণ করে জমা দেওয়া। প্রনোদনার সার বীজ প্রকৃত কৃষকের মাঝে বন্টন না করে অক”ষকদের প্রদান করা। নিয়মিত মাঠ পরিদর্শণ না করায় এলাকার কৃষকেরা তাকে চেনেনও না।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপসহকারি কৃষিকর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম প্রতিদিন নিজ বাড়ি বাঘারপাড়া উপজেলার খলসি গ্রাম থেকে কর্মক্ষেত্রে আসেন। গত ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে, অভয়নগরে যোগদান করেছেন। ওই ব্লকের মথুরাপুর বাজারে একটি সরকারি বীজ স্টোর ও তার সাথে একটি আবাসিক কোয়াটার রয়েছে। ব্লকটিতে প্রায় ২ হাজার ৮৪০ হেক্টর চাষের জমি রয়েছে। জমি গুলোর সবই তিন ফসলি। এখানে ধান, তীল,সরিষা, ডাল, সহবিভিন্ন প্রকার কান্দাল ফসল, শসা, সবজি সহ সারা বছর নানা ফসলের আবাদ হয়।

শসা ও সবজি ফসলের উপর ভক্তি করে ¯’ানীয় রাঙ্গার হাট দেশের ব”হত্তম শসার হাট হিসাবে পরিপিতি লাভ করেছে। শসার মৌসুমে এখানে প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক শসা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হয়।

উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম যোগদানের পূর্বে এখানে কর্মরত ছিলেন অসীম কুমার। এলাকার র্কষকেরা জানান, অসীম বাবু এলাকার প্রত্যেক কৃষকের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। যে কৃষক যখন পরামর্শের জন্য ডাক দিতেন তিনি ছুটে যেতেন তার ক্ষেতে।

দিঘিরপাড় গ্রামের কৃষক জসীম উদ্দীন জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান, ১৩ কাঠা জমিতে তিল ও ১২ কাঠা জমিতে তরকারি চাষ করেছেন। তার ধানের জমিতে ব্যাপক হারে মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। তিনি কয়েক দিন ধরে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তার পরামশের জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্ত এলাকার কোন কৃষক তার ফোন নাম্বার দিতে পারেনি। যে কারনে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভাব হয়নি।

ওই কৃষি কর্মকর্তা বিরুদ্ধে তার মতো আরো অনেকে অভিযোগ করেছেন। মথুরাপুর গ্রামের কৃষক ওহাব আলী বলেন, তিনি এবছর সাত কাঠা জমিতে সিম চাষ করেছিলেন। একদিন সকালে তিনি ক্ষেতে যেয়ে দেখেন তার সিম ক্ষেতে একটি প্রদশণী প্লটের সাইনবোর্ড ঝুলছে। তাকে কোন সহায়তা দেয়া হয়নি বা তার সাথে কোন আলাপ না করে প্রদর্শণী ক্ষেত হিসাবে উপজেলা অফিসে তালিকা করা হয়েছে।

মথুরাপুর বাজার সংলগ্ন সরকারি বীজ অফিসের পাশে অব¯ি’ত উপসহকারি কৃষিকর্মকর্তার বরাদ্দকৃত কোয়াটারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি সেখানে নিয়মিত থাকেন না। তার পাশে রয়েছে ওই কর্মকর্তার পরামর্শ কেন্দ্র। নিয়ম মাফিক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা সকাল নয়টা থেকে দুইটা পর্যন্ত কৃষকদের ক্ষেত পরিদর্শণ করবেন। এবং বিকাল তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ওই পরামর্শ কেন্দ্রে বসে কৃষদের পরামর্শ দেবেন। ¯’ানীয়রা জানায় ক”ষি কর্মকর্তা ¯’ানীয় কয়েকজন বখাটের সাথে যোগাযোগ রেখেন। এলাকার প্রকৃত ক”ষকদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। এরা আগে যিনি কর্মরত ছিলেন তিনি এলাকার সকল ক”ষকদের সাথে তার ভাল সম্পর্ক ছিলো। তিনি নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শণ করতেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কৃষক বলেন মথুরাপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম ওই উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রণোদনার গম বীজ পেয়েছিলেন। কিš’ তিনি ওই বীজ ক্ষেতে বপন না করে বিক্রি করে ফেলেন। এভাবে এলাকার অনেকে সরিষার বীজ ও সার তুলে অন্য ক”ষকের কাছে বিক্রি করেছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে উপসহকারি কৃষিকর্মকর্তা মো: মহিবুল ইসলাম বলেন, আমি নিয়মিত এলাকায় কর্তব্য পালন করি। কৃষক ওহাব সাহেবের সিম ক্ষেতে তিনি আরিফের জমি ভেবে প্রদর্শী সাইনবোড ঝুলিয়ে ছিলেন। এটা তার ভুল হয়েছে। তার সাথে এলাকার ক”ষদের ভাল সম্পর্ক আছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খানম বলেন, ওই উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগেও অনেকে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যব¯’া নেওয়া হবে।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত