২০২৩ সালে আমেনা খানের সঙ্গে পরিচয় হয় এক দরবেশ বাবার। ওই সময় পারিবারিক নানা সমস্যায় ভেঙে পড়েছিলেন আমেনা খান। পরিত্রাণ পেতে দ্বারস্থ হন দরবেশ বাবার। ভণ্ড দরবেশ বাবা সুযোগ বুঝে ভুক্তভোগীর থেকে হাতিয়ে নেন ২৫ লাখ টাকা। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এসব তথ্য জানান সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।
তিনি জানান, প্রতারণা বিষয়টি বুঝতে পেরে গত ৭ নভেম্বর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী। মামলার সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। গতকাল রোববার চক্রের মূলহোতা আশিকুর রহমানকে মাগুরা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জ থেকে চক্রের আরও ১৮ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। সবার বাড়ি ভোলা জেলায়।
মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, চক্রটি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছিল। তারা প্রথমে দৈবচয়নের মাধ্যমে বা ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত, বিত্তবানদের দারোয়ান বা ড্রাইভারের সাথে সম্পর্ক করে। পরে ড্রাইভার ও দারোয়ানের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিবারের গোপন তথ্য সংগ্রহ করে।
এ সময় তারা পারিবারিক সমস্যাগুলো কৌশলে জেনে বাড়ির মালিক ও স্ত্রীর নম্বর সংগ্রহ করে। তারপর শুরু করে প্রতারণার খেলা। স্ত্রীর কাছে স্বামীর বদনাম, স্বামীর কাছে স্ত্রীর বদনাম বলে কান ভারি করে। তখন উভয়ের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। প্রত্যেকে তাদের সমস্যা নিরসনের জন্য পথ খুঁজতে থাকে। এ সুযোগে প্রতারকরা মসজিদে নববীর ইমামের নাম প্রয়োগ করে প্রতারণা করতে থাকে।
সিআইডি প্রধান বলেন, চক্রটির দ্বিতীয় কৌশল হলো গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া। লটারি পাইয়ে দেয়া, ভাগ্য-বদল, পাওনা টাকা আদায়, মামলায় জেতানো, পারিবারিক সমস্যা সমাধানের কথা বলা হয় তাদের বিজ্ঞাপনে। আধ্যাত্মিক ও তান্ত্রিক ক্ষমতা বলে বিপদগ্রস্ত মানুষের বর্তমান ও ভবিষ্যত বলে দিতে পারবে এমন বিজ্ঞাপন দিতো চক্রটি। এসব বিজ্ঞাপন দেখে কোনো ভুক্তভোগী তাদের ফোন দিলে শুরু হতো প্রতারণা। নানা কৌশলে চক্রটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো।
তিনি বলেন, এভাবেই চক্রটি পারিবারিক সমস্যা সমাধান করার কথা বলে ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ‘দরবেশ বাবা’ পরিচয়ে কয়েক ধাপে তার কাছ থেকে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে ২০২০-২১ সাল থেকে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন।
রাতদিন-সংবাদ:-