Monday, April 29, 2024

বাগেরহাটে পরকীয়া সন্দেহে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করান স্বামী

- Advertisement -

বাগেরহাট প্রতিনিধি- বাগেরহাটের শরণখোলায় চাঞ্চল্যকর মা ও শিশু মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরকীয়া সন্দেহে নিজেই স্ত্রীকে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে হত্যা করিয়েছেন— জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইকে এমন তথ্য দিয়েছেন ওই নিহতের স্বামী আবু জাফর হাওলাদার। হত্যার দায় স্বীকার করে বাগেরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আছাদুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

পিবিআই, বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী পাপিয়া ও শিশু মেয়েকে হত্যার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন স্বামী মো. আবু জাফর হাওলাদার। তার স্বীকারোক্তি মতে, তিনি লোক দিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। তবে তার মেয়েকে মারার কথা ছিল না। তার স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক টানাপোড়েন চলছিল। তার স্ত্রী সবসময় মোবাইলে কার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানতে চাইলে ভিকটিম পাপিয়া তাকে জুতা দিয়ে আঘাত করে ও বাড়ি থেকে বের করে দেয়। স্ত্রী পাপিয়া এর আগেও স্বামীকে ঝাড়ু দিয়ে মেরেছিল। এসব বিষয় নিয়ে স্ত্রীর প্রতি সংক্ষুব্ধ ছিল আবু জাফর হাওলাদার।

পুলিশ সুপার বলেন, মনির (ভাড়াটিয়া খুনি) নামে এক ব্যক্তি তাকে (আবু জাফর) জিজ্ঞেস করে ‌‘কী জাফর ভাই, তোমাকে নাকি তোমার বউ জুতা দিয়ে মেরেছ’, তখন মনির প্রস্তাব দেয় তাকে ১ লাখ টাকা দিলে সব সমস্যার সমাধান করে দেবে। তখন আবু জাফর বলে ‘চিন্তা করে দেখি’। পরে আবু জাফর তার ভাই আবু তালেবের মাধ্যমে মনিরকে ৩০ হাজার টাকা দেয়। মনির টাকা পেয়ে আবু জাফরকে তার সাথে যোগাযোগ করতে নিষেধ করে, কাজ হলে বাড়ির লোকজন তাকে জানাবে বলে জানায়। কথা অনুযায়ী ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট আবু জাফরের স্ত্রী পাপিয়া ও মেয়ে সওদা জেনিকে কুপিয়ে হত্যা করে মনির হাওলাদার।

ঘটনার পরদিন মনির হাওলাদারসহ তার তিন ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু মনির জামিনে বের হলে আবু জাফর মনিরকে জিজ্ঞেস করে তার বউকে মারার কথা ছিল কিন্তু সে কেন তার মেয়েকে মেরে ফেলল। মনির জবাবে তাকে জানায়, তার মেয়ে তাকে চিনে ফেলেছিল তাই তাকে মেরে ফেলেছে। তার মরদেহ কেন টুকু মাস্টারের বাড়ি নিলো সে প্রশ্নের জবাবে মনির আবু জাফরকে বলে, টুকু মাস্টারের সাথে তার অন্য বোঝাপড়া আছে।

উল্লেখ, ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে পাপিয়া আক্তার (৩৮) ও তার মেয়ে ছাওদা জেনিকে (৫) কুপিয়ে হত্যা করে মনির হাওলাদার ও তার লোকজন। হত্যার পরদিনই মনিরসহ তার তিন ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনমাস কারাভোগের পরে তারা জামিনে মুক্ত হয়। পরে পিবিআই বাগেরহাট মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায়। পরে চলতি বছরের (২০২৪) ১১ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি পাপিয়ার স্বামী মো. আবু জাফর হাওলাদার (৩৯), ভাসুর আবু তালেব হাওলাদার (৫৫) ও তার স্ত্রী আসমা বেগম (৪৫) এবং পাপিয়ার আরেক ভাশুর মো. আবু বক্কার হাওলাদার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদেরকে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত