Monday, April 29, 2024

স্কুল নির্বাচনকে নিয়ে মণিরামপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের উপর হামলা

- Advertisement -

যশোরের মণিরামপুরের ৭ নম্বর খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জিন্নাহ হামলার শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে মাধ্যমিক স্তরের একটি বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে তার উপর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় চেয়ারম্যানকে বহনকারী প্রাইভেট কার পিটিয়ে ভেঙে দিয়েছে হামলাকারীরা। তার আগে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে উপজেলা চত্বরে লাঞ্ছিত হয়েছেন চেয়ারম্যানের বড় ভাই হযরত আলী।

৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সকালে উপজেলার হেলাঞ্চি কৃষ্ণবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে চেয়ারম্যান জিন্নাহর ছোট ভাই হাবিবুর রহমান হাবি সেখানকার ঈগল প্রতীকের কর্মী সাবেক ইউপি সদস্য সাধন কুমারসহ দুইজনকে কুপিয়ে আহত করেছিলেন। সেই ঘটনার রেশ ধরে চেয়ারম্যান জিন্নাহ উপজেলা পরিষদ চত্বরে হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।

চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জিন্নাহ বলেন, আমি টানা দুই বার হেলাঞ্চি কৃষ্ণবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি। নতুন করে বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের তফসিল হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল হক। আমি আবারও সভাপতি নির্বাচন করার উদ্দেশে ৭ জন অভিভাবক সদস্যর নামে মনোনয়ন কিনেছি। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল।

চেয়ারম্যান বলেন, দুপুরে আমার বড় ভাই হযরত আলীকে মনোনয়ন জমা দিতে উপজেলায় পাঠাই। সেখানে যুব উন্নয়ন দপ্তরের বাইরে কয়েকজন যুবক তাকে লাঞ্ছিত করে তাড়িয়ে দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে মৌখিক অভিযোগ করে চলে আসেন বড় ভাই।

চেয়ারম্যান জিন্নাহ বলেন, এরপর থানা পুলিশকে জানিয়ে বিকেলে খেদাপাড়া পুলিশ ক্যাম্প থেকে পুলিশ সাথে নিয়ে একটি প্রাইভেট কারে করে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার দপ্তরে প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে যাই। পথিমধ্যে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ফটকের সামনে গেলে বেশ কয়েকজন যুবক আমার গাড়িতে হামলা করে হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটাতে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ভিতর থেকে গাড়ির জানালা দরজা লক করে দিই। হামলাকারীরা জানালা ভেঙে আমাকে বের করার চেষ্টা করে। পরে কোন রকমে আমি প্রাণে বেঁচে ফিরি।

চেয়ারম্যান জিন্নাহ বলেন, আমি উপজেলা চত্বরে ঢোকার আগে বাইরে থানা পুলিশ উপস্থিত ছিল। হামলাকারীরা সংখ্যায় অনেক হওয়ায় পুলিশ তাদের রোধ করতে পারেনি। স্কুল ভোটের মনোনয়ন কেনার পর গত দুই দিন ধরে মনোনয়ন জমা না দিতে বিভিন্ন লোক মোবাইল ফোনে আমাকে হুমকি দিয়েছে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেলাঞ্চি ভোট কেন্দ্রের বাইরে হামলার শিকার সেই সাবেক ইউপি সদস্য সাধন কুমার হেলাঞ্চি কৃষ্ণবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে নিজের পক্ষের ৫ জন অভিভাবক সদস্যর মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

সাধন কুমার বলেন, জিন্নাহ চেয়ারম্যান একাধিকবার হেলাঞ্চি কৃষ্ণবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দুই ধাপে ৮টি নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়েছেন। কিন্তু স্কুলের উন্নয়নে তিনি কোন কাজ করেননি।

সাধন কুমার বলেন, আমি এবার এলাকাবাসীর সমর্থন নিয়ে সভাপতি নির্বাচন করছি। বৃহস্পতিবার বিকেলে আমি ৫ জনের মনোনয়ন জমা দিয়েছি। তখন চেয়ারম্যানের উপর হামলার বিষয়ে কিছু শুনিনি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অফিসের ভিতরে কিছু ঘটেনি।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল হক বলেন, হেলাঞ্চি কৃষ্ণবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। কোন প্রার্থীর লোক মনোনয়ন জমা দিতে এসে হামলার শিকার হয়েছেন এমন কিছু শুনিনি।

মণিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বলেন, বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটু ঝামেলা হয়েছিল। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।

-বিশেষ প্রতিনিধি
- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত