ঝিকরগাছা প্রতিনিধি-
মহান বিজয় দিবস ঘিরে দুইদিনে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি মোকামে কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। এবার সব রকমের ফুলের দাম চড়া হওয়ায় খুশি চাষিরা।
পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারাও বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। বেশি দামে কিনে তারা বেশি বিক্রি করতে পেরেছেন।
শুক্রবার গদখালি মোকাম ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র দেখা গেছে।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, কাকডাকা ভোরে গদখালি এলাকার চাষিরা তাদের ক্ষেতের তরতাজা ফুল নিয়ে হাজির হয় মোকামে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ী ও চাষিদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে ওঠে মোকাম। এদিন মোকামে প্রতি পিস গোলাপ ৮ টাকা থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মানভেদে প্রতি পিস জারবেরা ফুল ১৮ টাকা থেকে ২০ টাকায়, গ্লাডিওলাস ফুল ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা, রজনীগন্ধা ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা পিস ও চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৫ টাকা থেকে ৬টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল গাঁদাফুলের। প্রতি হাজার গাঁদাফুল মানভেদে ৫শ টাকা থেকে ৮শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কৃষকদের দাবি, এ বছর সব ধরনের ফুলের দাম বাড়তি। বাজার দর এমন চাঙ্গা থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
ঝিকরগাছারে হাড়িয়া গ্রামের কৃষক সুমন আলী বলেন, গত দুইদিন বাজারে ফুল বিক্রি করেছি। দাম ভাল পেয়েছি। গাঁদাফুল প্রতি হাজার ৫শ টাকা ও গোলাপ প্রতি পিস ১০ টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি। যা স্মরণকালের মধ্যে বেশি দাম পেয়েছি।
মঠবাড়ি এলাকার চাষি বুলবুল আহমেদ বলেন, আজকের বাজার খুবই ভাল। এমন বাজার থাকলে আমরা চাষিরা লাভবান হতে পারব। সব ধরণের ফুলের দাম বেশি হওয়ায় আমরা খুবই খুশি।
পাইকারি ক্রেতা আবদুল মান্নান বলেন, আজকের বাজারের সবচেয়ে দামি ফুল প্লাডিওলাস। প্রতি পিস পাইকারি কিনলাম ২২ টাকা থেকে ২৭ টাকায়। যা এই মৌসুমের সেরা দাম। পাইকারি পর্যায়ে আরও বেশি দরে বিক্রি হবে। চাষিরা যেমন বেশি দাম পাচ্ছেন, তেমনি আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে পারবো আশা করি।
আরেক পাইকারি ক্রেতা সাইফ আহমেদ বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বেশি। সেই হিসেবে ফুলের দামও চড়া। বাজারে ফুলের সরবরাহ কম, কিন্তু চাহিদা বেশি। এজন্য ফুলের দাম চড়া হয়েছে। চড়া দামেই কিনছি।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যশোর অঞ্চলের চাষিরা কয়েক কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছে। এ বছর ফুলের দাম চড়া হওয়ায় চাষিরা খুশি।
তিনি আরও বলেন, এবারের শীতের মৌসুমে একশ কোটি টাকার ফুল বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ও আবহাওয়া বজায় থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে আশাবাদী।