- সময় বাড়ানোর দামি
- অতিরিক্ত দরে বিক্রি হচ্ছে নিন্মমানের পণ্য!
সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে প্রতিবছর ভাদ্র মাসের শেষ দিনে মেলা শুরু হয় ৩শ বছরের ঐতিহ্যবাহী গুড় পুকুর মেলা।
শহরের বিভিন্ন প্রান্তজুড়ে বসে শত শত দোকানপাটে গ্রামীণ লোকজ ঐতিহ্যের পসরা সাজিয়ে চলে বেচাকেনা। ৩শ বছরের বেশি সময় ধরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এ মেলা চলাকালীন সময়ে সিনেমা হল এবং স্টেডিয়ামের সার্কেস প্যান্ডেলে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর থেকে কয়েক বছর বন্ধ ছিল মেলাটি। দীর্ঘ ৯ বছর পর ২০১১ সাল থেকে সাতক্ষীরা পৌরসভা ও জেলা প্রসাশনের উদ্যোগে সীমিত পরিসরে শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ফের চালু হয় মেলাটি।
এ বছর ২২ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হওয়া মেলা চলবে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে মেলার মেয়াদ আরও ১০-১৫ দিন বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন মেলা কতৃপক্ষ। মেলায় প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয়ে চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
মেলায় এসেছে শাড়ি কাপড়, কসমেটিকস, শিশুদের জন্য খেলনা, গ্রামীণ লোকজ ঐতিহ্য কাঠের তৈরি বিভিন্ন আসবাবপত্র, বাঁশ, বেত, লোহার তৈরি দা-বঁটিসহ সংসারিক জিনিসপত্র।
এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি মিঠাইসহ মুখরোচক সুস্বাদু খাবার নিয়ে বসেছে ব্যাবসায়ীরা। বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ৪ শতাধিক ব্যবসায়ীরা বেচাকেনার জন্য এসেছে এ মেলায়। এ মেলার জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকে এ অঞ্চলের মানুষেরা
প্রতিদিন শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে মেলা প্রঙ্গণ। ছুটির দিনে পরিবার পরিজন নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসছে অনেকে।
মেলায় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এ ছাড়া মেলায় বিনোদনের জন্য রয়েছে ঘুরনি, ভাসমান নৌকা, ট্রেন, নাগরদোলা-হানি সুইং, ইলেকট্রনিক নৌকাসহ বিভিন্ন ধরনের রাইড।
বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য এসব রাইডে চড়তে গেলে গুনতে অতিরিক্ত টাকা যা অযৌক্তিক বলে দাবী করছেন অভিভাবকরা।
তাছাড়া ত্রেতাদের অভিযোগ মেলায় অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের জিনিসপত্র। ক্রয় না করেই খালি হাতে বাড়ি ফিরছে অনেকে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছে সব জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি হওয়াসহ দোকান ভাড়া, বৈদ্যুতিক লাইট ভাড়া, প্যান্ডেল ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে মেলা পরিচালনা কমিটির বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করছে তারা।
নগরঘাটা থেকে মেলায় ঘুরতে আসা জাকির হোসেন বলেন, যে জিনিসের মূল্য মেলার ১৭০ টাকা। বাহিরে সেই একই জিনিস বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়! তায় কিছু না কিনে বাসায় যেতে হচ্ছে।
সাতক্ষীরার আবাদের হাট এলাকায় থেকে আসা ফারহানা বলেন, মেলায় অতিরিক্ত দাম এজন্য কেনা কাটা না করে করে শুধু ঘুরাঘুরি করে বাসায় যাচ্ছি।
পরিবার পরিজন নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসা আসাদুল ইসলাম বলেন, গুড় পুকুর মেলায় ছেলে, মেয়ে নাতিসহ পরিবার নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। তবে বাচ্চা বিনোদনের জন্য খেলনায় উঠতে গিয়ে অনেক টাকা দিয়ে টিকিট ক্রয় করতে হচ্ছে। যা অতিরিক্ত মনে হচ্ছে। টিকিটের দাম কমালে বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় আসতে পারবে।
গুড় পুকুর মেলার পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মানিক শিকদার জানান, ২০ দিনের জন্য মেলার অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন সপ্তাহ বেশি সময় ধরে বৃষ্টির কারনে দোকানপাট ভালোভাবে বসাতে পারেনি এবং লোকজন মেলায় আসতে পারেনি। এ কারনে ব্যবসায়ীরা লোকসানে রয়েছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মেলার সময় ১ মাস বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি ।