যশোর শহরতলীর আরবপুর মাঠপাড়ার গৃহবধূ শিরিনা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে ঘাতক স্বামী জুয়েল সরদারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার নারী ও শিশু নির্যানত দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির এক রায়ে এ সাজা দিয়েছেন। জুয়েল সরদার আরবপুর মাঠপাড়ার বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি সেতারা খাতুন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, জুয়েল সরদার খয়েরতলার ভৈরব ফিলিং স্টেশনে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করতো। জুয়েলের প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর পরিবারিক ভাবে শিরিনা বেগমকে বিয়ে করে। প্রথম পক্ষের দুই সন্তান ও শিরিনার নিজের সন্তানের দেখাশুনা নিয়ে প্রায় তার স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হত। ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর দুপুরে জুয়েল বাড়ি আসলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শিরিনা বেগমের সাথে বাকবিতন্ডা হয়।
একপর্যায়ে শিরিনাকে মারপিট করে ঘরে মধ্যে ফেলে দিয়ে পানির বোতলে রাখা পেট্রোল তার গায়ে ঢেলে দিয়ে জুলেয় আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রতিবেশীরা ঘরের মধ্যে থেকে ধুয়া বের হতে দেখে ঘরে ঢুকে দেখে শিরিনার গায়ে আগুন জলছে। এ সময় দ্রুত পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে শিরিনাকে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় শিরিনাকে প্রথমে যশোর পরে খুলনা এবং রাতে ঢাকা নেয়ার পথে মারা যায়।
এ ঘটনায় ১৪ অক্টোবর নিহতের পিতা ঝিকরগাছার কায়েমকোলা গ্রামের খলিলুর রহমান বাদী হয়ে জামাই জুয়েলকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় জুয়েল সরদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুরতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ওসি রেজাউল করিম।
মামলার সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি জুয়েল সরদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন।
রাতদিন সংবাদ/আর কে-১৮