Friday, December 5, 2025

অভয়নগরে ‘স্বপ্ন’ সুপারশপে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় সেই তরুণীর সংবাদ সম্মেলন

যশোরের অভয়নগরে ‘স্বপ্ন’ সুপারশপে ছুরিকাঘাতে আহত বিক্রয়কর্মী সেই তরুণী বিথি খাতুনকে মামলা তুলে নিতে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

এ সময় বিথি খাতুন তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘২০২১ সালের ২৯ মে আমার সঙ্গে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার ভান্ডব গ্রামের সফিরউদ্দিন শেখের ছেলে মো. হবিরুল ইসলাম ওরফে অভির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে অভি যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। স্বামীর প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা থাকায় তার অন্যায়-অত্যাচার মুখ বুঝে সহ্য করতাম। এক পর্যায়ে সে আমার নামে ইসলামী ব্যাংক ভালুকা শাখায় একটি একাউন্ট খোলায়। সেই একাউন্টের চেক বইয়ে আমাকে দিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাক্ষর করা চেক বই দেখিয়ে সে আমাকে দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করাতো। কিছুদিন পর সে আমাকে দিয়ে আমার ভগ্নিপতি মো. তোফায়েল হোসেনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করায়। ধীরে ধীরে তার অত্যাচার বাড়তে থাকে। আমার বাবার মৃত্যুর পর সে ও তার পরিবারের সদস্যরা বাবার মরদেহ দেখতে দেয়নি। পরবর্তীতে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে সে আমাকে গৃহবন্দি করে রাখে। গৃহবন্দির খবর পেয়ে ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর ভালুকা ইউপি চেয়ারম্যান আকরাম খান আমাকে উদ্ধার করেন। ঘটনা তদন্ত করে তিনি অভির সঙ্গে তালাকনামা করিয়ে আমার ভাই রশিদ শেখ মিন্টুর হাতে তুলে দেন। তারপর আমার ভাই আমাকে নিয়ে অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটাগ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে অভয়নগরের নওয়াপাড়া বাজারে ‘স্বপ্ন’ সুপারশপে বিক্রয়কর্মী হিসেবে আমি যোগদান করি।

যোগদানের পর থেকে অভি আমার কর্মস্থলে এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভালুকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে আমি রাজি না হলে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং দুপুর ১২ টার দিকে অভির নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ যুবক ‘স্বপ্ন’ সুপারশপে প্রবেশ করে এবং হত্যার উদ্দেশে অভি আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিষয়টি জানতে পেরে নূরবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে অভিকে তার প্রাইভেট কারসহ আটকে রেখে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

তিনি আরও বলেন, ‘ছুরিকাঘাতের ঘটনার পরদিন আমার চাচা আনছার আলী শেখ বাদি হয়ে অভিসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৮। মামলা দায়েরের পর গত ৩ অক্টোবর অজ্ঞাত নম্বর থেকে পুরুষ ও নারী কন্ঠে মামলা তুলে না নিলে আমার চাচা মামলার বাদিসহ পরিবারের সকলকে খুন করা হবে বলে হুমকি দেয়। বর্তমানে মামলার বাদিসহ আমি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। গ্রেপ্তার হওয়া অভি জামিনে বেরিয়ে আমাকে হত্যা করতে পারে, যে কারণে আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। এছাড়া প্রাইভেট কারের চালকসহ পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

রাতদিন ডেস্ক/জয়-০৫

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর