যশোর উপশহরের ইমু হত্যা মামলায় শাহীন নামে আরো এক আসামিকে আটক করেছে পিবিআই। পিবিআই যশোর জেলার ইউনিট ইনচার্জ এম, কে, এইচ জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা ২০ এ পুরাতন কসবা এলাকা থেকে তাকে আটক করে। শাহিন সরদার ওই এলাকার হাসেম সরদারের ছেলে। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী শহরের বিবি রোডের শিশু একাডেমীর বাউন্ডারী ওয়ালের মধ্য হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুইটি বড় হাসুয়া-দা উদ্ধার করে। শাহিন জানিয়েছে, গত ২১ জুন রাত ৮টার দিকে দুর্জয়, বাবু, সোহাগ, সুইট, আসিফ, ইয়াছিন, আল শাহরিয়ার, মাসুদ ও শাহিনসহ তারা ৯জনে উপশহর শিশু হাসপাতালের সামনে রয়েল টি স্টলের কাছে যায়। সেখানে তবে তাদের প্রত্যেকের কাছে ধারালো অস্ত্র ছিল। ওই টি স্টলের মধ্যে ইমু ছিল। বাবু, দুর্জয় ও সোহাগ প্রথমেই ইমুকে স্টেপ করে। পরে অন্যরা ইমুকে দা দিয়ে আঘাত করে। ইমু মাটিতে পড়ে গেলে তারা সবাই চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে খবর পায় ইমু মারা গেছে।
এরআগে এ মামলার আরেক আসামি শাহরিয়ারকে আটক করা হয়। পরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ আকরাম হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেনতিনি । গত বৃহস্পতিবার এ মামলার দুইজন স্বাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেন। স্বাক্ষী দুইজন হলেন, শহরের পুরাতন কসবা লিচুবাগান এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম ও নওদা গ্রামের মৃত রওশন আলীর ছেলে রয়েল।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি জানান যায়, গত ২১ জুন, ২০২০ রাত ৭.২৫টায় কোতয়ালী থানার ‘‘রয়েল টি স্টল”এর সামনে ভিকটিম
এসহানুল হক ও তার বন্ধু শোয়েব একত্রে চা পান করছিল। উক্ত চায়ের দোকানে শাকিল, শাখাওয়াত ও তানভীর নামে তিন জন যুবকও চা পান করছিল। উল্লেখিত যুবকগণ চা পানরত অবস্থায় উক্ত চায়ের দোকানে গ্রেফতারকৃত আসামী আল শাহরিয়ার (২০) এর সহযোগী বন্ধু দূর্জয় (২০) ও মাসুদ (২৫) একটি মোটরসাইকেল যোগে সেখানে আসে। এলাকায় মাদক বিক্রয় সংক্রান্তে শাকিল ও দূর্জয়ের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা ছিল। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দূর্জয়, শাকিলকে চায়ের দোকানে পেয়ে মারধর শুরু করে এবং শাকিলের মোটর সাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়। ঘটনাস্থলে ভিকটিম এহসানুল হক উভয় পক্ষের মারামারি ও বিরোধ নিষ্পত্তি করার চেষ্টাকালে তাদের মধ্যে গোলযোগ থামানোর একপর্যায়ে এহসানুল হক দূর্জয়কে চড় থাপ্পড় মেরে তাৎক্ষণিক উভয়ের মধ্যে সমঝোতা করে দেয়। ভিকটিম কর্তৃক দূর্জয়কে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার জন্য ভিকটিমের উপর ক্ষিপ্ত হয়। ইতিমধ্যে শাকিল ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। অতঃপর রাত অনুমানিক ৭.৪০ টায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে দূর্জয়, তার বড় ভাই বাবু ও সোহাগ মোটর সাইকেলযোগে পুনরায় ‘‘রয়েল টি স্টল” এ যায়। দূর্জয়ের অন্যান্য সহযোগী গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত আল শাহরিয়ারসহ, মাসুদ, ইয়াসিন, সুইট, শাহিন ও আসিফ ২টি অটোরিক্সাযোগে ঘটনাস্থলে যায়। এহসানুল হককে উক্ত স্থানে বসে থাকা অবস্থায় পেয়ে প্রথমে দূর্জয় ও সোহাগ তাদের হাতে থাকা বার্মিজ ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে এলোপাথাড়ী কুপাতে থাকে এবং গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত আল শাহরিয়ার ও অন্যান্য অভিযুক্তরা তাদের হাতে থাকা দা দিয়ে ভিকটিমকে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে গুরুতর আহত এহসানুলকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত্র ৮.৫০ টায় মৃত্যুবরণ করে।
বিশেষ প্রতিনিধি







