যশোরে শ্বেতফর্সা হওয়ায় বাবা-হারা সেই আফিয়ার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এর আগে সোমবার রাতে আফিয়ার মা মনিরা বেগম কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই ডায়েরির সূত্র ধরেই মঙ্গলবার জিডির তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানান। তবে আবেদন শুনানির দিন এখনো ধার্য হয়নি। যশোর সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাজুয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মনিরা জানান, সোমবার তিনি থানায় উপস্থিত হয়ে স্বামী মোজাফফর হোসেনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, যশোর সদর উপজেলার বাউলিয়া চাঁনপাড়া গ্রামের মজিদ মোল্লার ছেলে মোজাফফরের সঙ্গে ৫ বছর আগে তার বিয়ে হয়। দুই বছরের মাথায় মোজাফফরের ওরসে আফিয়ার জন্ম হয়। কিন্তু শ্বেতবর্ণের হওয়ায় ওই বাচ্চা তার নয় বলে দাবি করেন মোজাফফর। একপর্যায়ে তিনি মনিরাকে ডিভোর্স দেন। এরপর থেকেই তিনি আফিয়াকে নিয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে মোজাফফর কোনো খোঁজখবর নেন না, এমনকি ভরণ–পোষণও দেন না। এছাড়া মোজাফফর বিভিন্ন মানুষের কাছে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে আসছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়। কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা যায়, আফিয়াকে নিয়ে বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ সুপার রওনক জাহান আইনি সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেন। তার পর থেকেই পুলিশ কাজ করছে। এ বিষয়ে জিডির তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই দেবাশীষ হালদার বলেন, মঙ্গলবার আফিয়ার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। আদালতের অনুমতি পেলে আফিয়া ও তার বাবার ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। তবে বাবা দেশে না থাকলে দাদা কিংবা চাচার ডিএনএ পরীক্ষা করালেও বোঝা যাবে আফিয়া কার সন্তান। উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্র–পত্রিকায় লেখালেখি হলে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আফিয়ার বাড়িতে যান। দেওয়া হয় উপহার। শুধু তাই নয়, আফিয়ার দায়িত্বও নেওয়া হয়। বিষয়টি পুলিশ সুপারের নজরেও আসে। তাৎক্ষণিক তিনিও আইনি সেবা দেওয়ার আশ্বাস দেন। সেই সূত্র ধরেই আফিয়ার ডিএনএ পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়।
বিশেষ প্রতিনিধি
