Friday, December 5, 2025

যশোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাকামুল পরীক্ষায় অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

যশোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ‘তাকামুল’ পরীক্ষার নামে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ কয়েকজন ইনস্ট্রাক্টরের নেতৃত্বে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রথমে পরীক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানো হয়, পরে অর্থের বিনিময়ে পাশ দেখানো হয়। সম্প্রতি এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি অনুসন্ধানে আসেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরোর উপপরিচালক আব্দুল গাফ্ফার।

ভুক্তভোগীরা জানান, সৌদি আরবে কাজ করতে এখন ‘তাকামুল’ নামে একটি পেশাগত দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। নির্মাণ, ইলেকট্রিক, প্লাম্বিং, মেকানিক, হোটেল সার্ভিসসহ বিভিন্ন খাতে এই পরীক্ষার মাধ্যমে দক্ষতা যাচাই করা হয়। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে ভিসা বাতিল পর্যন্ত হতে পারে। ফলে এই পরীক্ষার সার্টিফিকেট ছাড়া সৌদি আরবে চাকরি পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

যশোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেই অনুষ্ঠিত হয় এই পরীক্ষা। রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি দিতে হয়। এরপর কম্পিউটার ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার ফলাফল সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রথম ধাপে বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীকে ফেল দেখানো হয়, পরে ৭ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষের বিনিময়ে পাশ দেখানো হয়।
সদর উপজেলার গোপালপুরের আলামিন, ধলগারার তাপস ও খাজুরার সুমন জানান, প্রথমে তারা ফেল হন, পরে আট হাজার টাকা দিলে সার্টিফিকেট পান। তাদের দাবি, এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল গাজী ইফাত মাহমুদ, ইনস্ট্রাক্টর সিরাজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম ও নেওয়াজ শরীফসহ আরও কয়েকজন। নিয়মিত এসব অনিয়ম ও অভিযোগে প্রতিষ্ঠানে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও প্রিন্সিপাল ব্যবস্থা নেননি বলে জানা গেছে। অবশেষে কয়েকজন ভুক্তভোগী বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে অনুসন্ধান টিম যশোরে আসে।

এ বিষয়ে ইনস্ট্রাক্টর সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি ১৯ অক্টোবর শরীয়তপুরে বদলি হয়েছেন এবং তাকামুল পরীক্ষার দায়িত্বে কখনও ছিলেন না। বিষয়টি প্রিন্সিপাল ও অন্যান্য ইনস্ট্রাক্টররা দেখতেন বলেও জানান তিনি। তাদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিলো। সেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত এসেছিলো। এসব কাজের সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

অন্যদিকে, প্রিন্সিপাল গাজী ইফাত মাহমুদ বলেন, কিছু অভিযোগ ছিল ইনস্ট্রাক্টর সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সেসব অভিযোগের প্রেক্ষিতেই  তদন্ত টিম এসেছিলো। কিন্তু কোনো অনিয়ম পায়নি বলেই আমাকে জানিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে টাকা নিয়ে কোনো অবৈধ লেনদেন হয়না।

সাকিব হাসান

 

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর