Friday, December 5, 2025

২৫ দিন পর ধরা পড়ল মিথ্যা ঘোষণায় আমদানিকৃত কোটি টাকার ব্লেড কারসাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ২৫ দিন ধরে বেনাপোল স্থলবন্দরে আটক থাকা ভারতীয় তিনটি ট্রাকে অবশেষে ধরা পড়েছে ঘোষণাবহির্ভূত কোটি টাকার ব্লেড কারসাজি। বুধবার (২২ অক্টোবর) দিনব্যাপী বন্দরের ৪২ নম্বর শেডে পণ্য আনলোড ও পরীক্ষণের সময় মিলেছে ১০ লাখ ৮০ হাজার পিস ব্লেড এবং অতিরিক্ত তিন প্যাকেজ অঘোষিত পণ্য। পরীক্ষণের নেতৃত্ব দেন বেনাপোল কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার সাকিব রায়হান।

সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আশিকুল ইসলাম অ্যান্ড সন্স নামের এক আমদানিকারক ভারত থেকে ‘স্টিল আইটেম অ্যান্ড আদার্স’ ঘোষণায় ৩০ হাজার ৮৩৮ কেজি ওজনের তিনটি ট্রাকে পণ্য আমদানি করেন। ম্যানিফেস্ট নং: ৬০১/২০২৫/০০৩/০০৬১২৪৭/০৯। ট্রাক নম্বরগুলো হলো — ডব্লিউবি ০২সি-৫৯২১, ডব্লিউবি ৩৩ডি-১০২৭ ও ডব্লিউবি ১১সি-৩১৩৩।
এ চালানের সিএন্ডএফ এজেন্ট ছিল হুদা ইন্টারন্যাশনাল।

একইদিনে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানায়, চালানটিতে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আনা হয়েছে। এর পরপরই ট্রাকগুলো আটক করা হলেও পরীক্ষায় বিলম্ব ঘটে টানা ২৫ দিন।

পরীক্ষণে দেখা যায়, ঘোষণায় উল্লেখিত স্টিল পণ্যের সঙ্গে পাওয়া গেছে ১০ লাখ ৮০ হাজার পিস ব্লেড এবং অতিরিক্ত তিনটি প্যাকেজে অঘোষিত পণ্য। এতে সরকারের কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের ৪২ নম্বর শেড ইনচার্জ আমিনুর রহমান জানান, তাদের রেকর্ড অনুযায়ী ট্রাকগুলো ঘোষণাপত্রে ‘স্টিল আইটেম অ্যান্ড আদার্স’ হিসেবে উল্লেখ ছিল।

তবে স্থানীয় গোয়েন্দা সূত্র বলছে, মূল নথিটি পরবর্তীতে পরিবর্তন করে নতুন (জাল) ডকুমেন্টে ৯ লাখ ব্লেড দেখানো হয়, যেখানে বাস্তবে পাওয়া গেছে তারও বেশি — ১০ লাখ ৮০ হাজার পিস।

বেনাপোল বন্দরের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এনএসআইয়ের সুনির্দিষ্ট তথ্যের পরও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ২৫ দিনের নীরবতা ও বিলম্ব পরীক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে। মনে হচ্ছে কিছু অসাধু কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃতভাবে আমদানিকারককে সময় দিয়েছেন পুরোনো নথি গায়েব করে নতুন নথি তৈরি করার জন্য।”

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেনাপোলের এই ঘটনা কেবল একটি চালানের নয়— এটি কাস্টমস প্রশাসনের ভেতরের দুর্নীতি, অনিয়ম ও দায়হীনতার নগ্ন প্রতিচ্ছবি, যা সরকারের রাজস্ব নিরাপত্তার জন্য বড় সতর্ক সংকেত।

বিষয়টির সর্বশেষ জানতে বেনাপোল কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার সাকিব রায়হানকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর