মোঃ নাজমুল হুদা, বান্দরবান: বান্দরবান পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে চাঞ্চল্যকর এক হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম (বার)সহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ভিকটিম অমন্ত সেন তংচংগ্যা (৪৬) পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। তিনি প্রতিদিন রোয়াংছড়ি স্টেশন ও আশপাশের এলাকায় ইজিবাইক চালাতেন। ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তিনি প্রতিদিনের মতো ইজিবাইকটি ভাইয়ের বাসায় চার্জে দিয়ে বাড়ি ফেরার কথা বলে বের হন। কিন্তু পরদিন সকাল পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় তার ভাই রোয়াংছড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে জানা যায়, ঘটনার রাত ১১টার দিকে অমন্ত সেন তংচংগ্যা ওয়াগয়ে পাড়া পুরাতন বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন একটি বেলুন কারখানায় বসে মালিক ফয়েজ ও কর্মচারীদের সঙ্গে মোবাইলে ক্রিকেট খেলা দেখেন। সেখান থেকে বের হয়ে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি।
পরদিন সকালে রোয়াংছড়ি থানার আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের নাথিং ঝিরি এলাকায় কাদা মাখা অবস্থায় ভিকটিমের কাপড়ের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন, রক্তমাখা বাঁশের কঞ্চি ও গাছের টুকরা উদ্ধার করে পুলিশ। ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বান্দরবান পৌরসভার কাশেমনগর সাঙ্গু নদীর কিনারে পানির ওপর ভাসমান অবস্থায় অমন্ত সেন তংচংগ্যার লাশ উদ্ধার করা হয় এবং পোস্টমর্টেম সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিশেষ অভিযান শুরু করে জেলা পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন আসামি রাজন্ত তংচংগ্যাকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, মুনাফার শর্তে তিনি ভিকটিমকে ৩৫ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন টাকা ফেরত না পাওয়ায় ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভিকটিমের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং টাকার বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির সময় আসামি ভিকটিমকে ঘুষি ও বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন এবং পরে একটি গাছের টুকরা দিয়ে মাথায় আঘাত করলে অমন্ত সেন মারা যান। পরে লাশটি সাঙ্গু নদীতে ফেলে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব আবদুল করিমসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।







