রনি হোসেন, কেশবপুর (যশোর): যশোরের কেশবপুরে মাছ চাষে প্রাকৃতিক শ্যাওলা ব্যবহার করে সফল হচ্ছেন ঘের মালিকরা। বিল ও জলাশয় থেকে ‘পাটা শ্যাওলা’, ‘চুনে শ্যাওলা’ ও ‘চিকুন শ্যাওলা’ সংগ্রহ করে মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, সতেজ থাকছে এবং রোগবালাই থেকেও রক্ষা পাচ্ছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক খাদ্যের খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে বর্তমানে ৪ হাজার ৬৫৮টি মাছের ঘের রয়েছে। ঘের মালিকদের দাবি, শ্যাওলা ব্যবহারে মাছ প্রাকৃতিক স্বাদে বেড়ে ওঠে, পরিবেশের ক্ষতি হয় না এবং দেশি প্রজাতির মাছের জন্যও অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন বিল এলাকায় দেখা যায়, সকাল থেকে ঘের মালিক ও শ্রমিকরা পাটা বা চিকুন শ্যাওলা সংগ্রহ করছেন। ভোগতী নরেন্দ্রপুর বিল থেকে শ্যাওলা সংগ্রহ করছিলেন হাবাসপোল এলাকার ঘের ব্যবসায়ী আবদুর রহমান। তিনি বলেন, “ঘেরের মাছ মোটাতাজা রাখা ও রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে শ্যাওলা খুবই উপকারী।”
ত্রিমোহিনী এলাকার শংকর পাল ও আয়ুব আলী জানান, ঘের মালিকরা মাছ চাষে বিল ও নদীর শ্যাওলা ব্যবহার করায় তারা প্রতিদিন কাজ পাচ্ছেন। কপোতাক্ষ নদ থেকে প্রতিদিন এই ‘চুনে শ্যাওলা’ সংগ্রহ করে আলমসাধু গাড়ি প্রতি ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন তারা।
ঘের ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক বলেন, “শ্যাওলা মাছকে রোগমুক্ত রাখে এবং সুস্বাদু করে তোলে। অন্যদিকে স্থানীয় শ্রমজীবীরাও প্রতিদিন শ্যাওলা সংগ্রহের কাজে যুক্ত হয়ে আয় করছেন।”
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস বলেন, “শ্যাওলা মাছের অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য। এ পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই। উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের আয়-রোজগার বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”







