Friday, December 5, 2025

নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজে অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইল সদর উপজেলার ইচড়বাহার এলাকায় অবস্থিত নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজে নানাবিধ অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি ২০১৯ সালে এমপিওভুক্ত হয়। শুরু থেকেই নিয়মবহির্ভূতভাবে কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন নড়াইল আব্দুল হাই সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সসীম সরকার। তিনি একাধারে সিটি কলেজে কর্মরত থেকেও কৃষি ও কারিগরি কলেজের প্রশাসনিক দায়িত্ব ও সোনালী ব্যাংকের রূপগঞ্জ শাখায় থাকা কলেজের হিসাব পরিচালনা করেছেন, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধিমালার পরিপন্থি।

পরবর্তীতে কলেজ পরিচালনা কমিটির একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রমেশ বিশ্বাসকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে, তিনি এই পদের জন্য যোগ্য নন এবং তার কোনো নিয়োগপত্রও নেই।

এছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, এমপিওভুক্তির আগে একটি নামমাত্র ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কলেজটি পরিচালিত হতো। ওই ফাউন্ডেশনের সভাপতি ভগীরত বিশ্বাস ও সসীম সরকার কলেজটিকে নিজেদের মতো করে পরিচালনা করে আসছেন। এতে করে নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতা, ছাত্রসংখ্যা বাড়াতে ভুয়া ছাত্র দেখানো এবং কলেজের সকল জরুরি কাগজপত্র সসীম সরকারের বাড়িতে সংরক্ষণের অভিযোগও এসেছে।

বর্তমানে কলেজে চার সেমিস্টার মিলিয়ে প্রকৃত ছাত্রসংখ্যা মাত্র ৮৭ জন। ফাউন্ডেশনের নামে পরিচালিত হওয়ায় সরকারি ভবন নির্মাণসহ কাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এলাকাবাসী এই ফাউন্ডেশন বাতিল করে কলেজের উন্নয়নে সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ বিশ্বাস বলেন, আমাকে কমিটি রেজুলেশনের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, কোনো নিয়োগপত্র নেই। সোনালী ব্যাংকের হিসাবও এখন আমার নামে করা হয়েছে।

সহকারী অধ্যাপক সসীম সরকার বলেন, ২০০৫ সালে আমি স্থানীয়দের নিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি, সেটাই আমার আত্মতৃপ্তি। বর্তমানে আমি কলেজের কোনো কার্যক্রমে নেই। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলছি না।

কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ভগীরত বিশ্বাস জানান, অধ্যক্ষ না থাকায় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রমেশ বাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কলেজ ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র সসীম বাবুর বাড়িতে রাখা হয়।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের অনিয়ম বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আজ সংশ্লিষ্টদের অফিসে ডাকা হয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

আর কে-০১

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর