যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মশ্বিমনগর কওমি মহিলা মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি রাতদিন নিউজে প্রকাশিত হওয়ার পর ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ভেস্তে যায়। ইতোমধ্যে পুলিশ ভিকটিমকে হেফাজতে নিয়েছে, মামলার প্রস্তুতিও চলছে। এ ঘটনায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। একই সাথে বড় হুজুর জালালকে দ্রুত আটকের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের দাবি, গত বুধবার সকালে দিন মেয়েটিকে বলা হয়, মাদ্রাসার শিক্ষক জালালের অসুস্থ মাকে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। নির্দিষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, মাদ্রাসা থেকে খাবার নিয়ে সরাসরি জালালের বাড়িতে যেতে হবে। সরল বিশ্বাসে মেয়েটি খাবার নিয়ে সেখানে যায়।
তবে খাবার পরিবেশনকালে হঠাৎ মাদ্রাসার বড় হুজুর জালাল তাকে ঝাপটে ধরে। মেয়েটি চিৎকার করলে তার ভাই, স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষক জুলফিকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর দুই ভাই মিলে ভয়ভীতি ও মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে ঘটনাটি গোপন রেখে মাদ্রাসায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ছাত্রীটি মাদ্রাসায় ফিরে না গিয়ে জামাকাপড় নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন এবং পুরো ঘটনা পরিবারকে জানান। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয়রা মাদ্রাসার অফিস ঘেরাও করে এবং জালালের বাড়িতেও খোঁজখুঁজি চালায়। কিন্তু তার আগেই ‘বড় হুজুর’ জালাল পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় আরও অভিযোগ উঠে, অভিযুক্ত জালালের দুই ভাই স্কুলশিক্ষক জুলফিকার ও স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল খালেক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। একাধিকবার ভিকটিম পরিবারকে মীমাংসার প্রস্তাবও দেন তারা। এমনকি সাংবাদিক পরিচয়ধারী বাবুসহ আরও কয়েকযুবক এ ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়েন। তারাও জালাল হুজুরের পক্ষনিয়ে চেষ্টা করেন ঘটনাটি গোপন করার। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বক্তব্য দিয়েছেন আব্দুল খালেক। যা নিয়ে শুক্রবার রাতদিন নিউজে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের। মণিরামপুর থানা পুলিশ ভিকটিম পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের আইনি সহযোগিতা দেন। শনিবার এ ঘটনায় মামলার পর শিক্ষার্থীকে ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহনের প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে, ভিকটিম আমাদের হেফাজতে আছে। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।
শামীম হোসেন







