ইসরায়েলের মানবিক সহায়তা বন্ধ ও অবরোধের মধ্যেই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অনাহারে ৩৫ দিন বয়সী এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির মৃত্যু হয় গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিলেও, হামলা ও সহিংসতা থেমে নেই। ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) এর সহায়তা কেন্দ্রের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে।
রোববার (২০ জুলাই) এসব তথ্য প্রকাশ করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ইসরায়েলের মানবিক সহায়তা বন্ধ এবং বিতর্কিত ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর গুলি চালানোর মধ্যেই গাজায় আবারও হৃদয়বিদারক এক ঘটনা ঘটেছে। গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, অপুষ্টি বা খাদ্য সংকটে মৃতদের তালিকায় এই নবজাতকও যুক্ত হয়েছে। এদিন আমাদের হাসপাতালে অনাহারে আরও দুজন মারা গেছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগগুলো খাবারের অভাবে কাতর হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে উপচে পড়ছে। অন্তত ১৭ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।
এদিকে গাজার দক্ষিণে খান ইউনিস ও রাফাহ অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানায়, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) সহায়তা কেন্দ্রের সামনে সংঘটিত হতাহতের জন্য তারা ইসরায়েলি বাহিনীকে দায়ী করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আল-খালিদি বলেন, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালিয়েছে। আমরা পালাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের লক্ষ করে গুলি করে।” আরেকজন, মোহাম্মদ আল-বারবারি বলেন, “এই কেন্দ্রগুলো এখন শুধু মৃত্যু ফাঁদ। মানুষ খাবারের আশায় আসে, কিন্তু ফিরে যায় লাশ হয়ে।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশনের মহাসচিব জগন চাপাগাইন বলেন, গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। কাউকে যেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একমুঠো খাবার সংগ্রহ করতে না হয়।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান ইয়ান এগেল্যান্ড বলেন, গত ১৪২ দিনে আমরা একটি ট্রাকও গাজায় প্রবেশ করাতে পারিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের যেসব নেতা বলছেন সহায়তা প্রবাহ স্বাভাবিক হচ্ছে, তা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না।
জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, তারা মিসরের সীমান্তে গাজার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রেখেছে, কিন্তু ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে তা প্রবেশ করানো যাচ্ছে না। সংস্থাটি স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, সীমান্ত খুলুন, অবরোধ তুলে নিন এবং আমাদের কাজ করতে দিন।
অনলাইন ডেস্ক







