মোঃ নাজমুল হুদা, লামা : বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে সাহাব উদ্দীন (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে প্রতিপক্ষের সশস্ত্র সদস্যরা। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
এ ঘটনায় শফিকুর রহমান (৫৫) নামে আরও একজন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় সরই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবুর রহমান পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, পুরনো জমি বিরোধের জেরে আব্দুল মাবুদ গং-এর নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল লাঠি, হুন্ডা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাহাব উদ্দীনের উপর হামলা চালায়।
আহত সাহাব উদ্দীনের মেয়ে আরেফা বেগম মুন্নি জানান, “২০২২ সাল থেকে ৩০১ নম্বর সরই মৌজার ৩৩৪ নম্বর দাগের জায়গা নিয়ে আমাদের সঙ্গে আব্দুল মাবুদ গং-এর বিরোধ চলছিল। উভয়পক্ষ ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করলে পরিষদ বিষয়টি আদালতের সিদ্ধান্তে ছেড়ে দেয়। ২০২৩ সালে আদালত ওই জমিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের ভিন্ন একটি দাগের জমিতে চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর নিয়ে গেলে প্রতিপক্ষের নুরুল আমিন, নুরুল আবছার, কামরুল ইসলাম, আমির হোসেন, রাশেরদুল ইসলামসহ আরও ১৫-২০ জন সশস্ত্রভাবে হামলা চালায়। আমার বাবা সাহাব উদ্দীনের ডান হাতে রক্তক্ষরণ হয়, সঙ্গে শফিকুর রহমানও আহত হন। আমাদের দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে তারা এমন বর্বরতা চালায়। পরে সরই ফাঁড়ির পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।”
অভিযুক্ত পক্ষ দাবি করেছে, সাহাব উদ্দীন গং আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাষাবাদ করতে গেলে তারা বাধা দেয়। এতে তাদেরও দুইজন আহত হন বলে দাবি করেছেন তারা।
লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ জোবাইর বলেন,
“আহত সাহাব উদ্দীনের ডান হাতে মারাত্মক আঘাত রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
সরই পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। আহতদের চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছি এবং জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছি।”
স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানান, “এলাকায় কিছু অসাধু চক্র জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সমাজে উত্তেজনা ও অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে স্থানীয়দের সতর্ক ও সচেতন থাকা জরুরি।”
বিচারাধীন জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে এমন হামলা স্থানীয়ভাবে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণই পারবে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে।







