Friday, December 5, 2025

টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর—সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি

যশোরের চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নের শত শত সবজি চাষি টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে পড়েছেন বিপাকে। এসব এলাকার অধিকাংশ সবজিক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সবজি গাছ মরে যাওয়ার পাশাপাশি আগাম শীতকালীন চারা রক্ষাও এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। কৃষকরা বাধ্য হয়ে বৃষ্টির মধ্যেই জমির পানি সেচে ফেলার চেষ্টা করছেন।

এই তিনটি ইউনিয়নকে যশোরের সবজি উৎপাদনের মূল এলাকা হিসেবে ধরা হয়। জমির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশজুড়েই এখানে সবজি চাষ হয়। বর্তমানে মাঠের পর মাঠজুড়ে চাষ করা হয়েছে পটল, বরবটি, পুঁইশাক, উচ্ছে, ঢেঁড়স, বেগুন, আগাম পাতাকপি, কচুরমুখি ও বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন চারা। কৃষকরা শীতের আগাম সবজি বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু বর্ষার শুরুতেই টানা বৃষ্টিতে সেই স্বপ্নে এখন ধস নামছে।

চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের দোগাছিয়া গ্রামের পটল চাষি তরিকুল ইসলাম বলেন,

“আমার পটল ক্ষেত পুরোপুরি পানির নিচে। এই বৃষ্টির পর কিছুই আর বাঁচবে না।”

একই গ্রামের বরবটি চাষি দেলোয়ার গাজী জানান,

“গাছে ফুল আসলেও ভারী বৃষ্টির কারণে সব ঝরে যাচ্ছে। ফলন একেবারেই হবে না, আর গাছগুলোও টিকে থাকবে না।”

আব্দুলপুর গ্রামের চারা উৎপাদনকারী টিটো বলেন,

“চারা কিছুটা বাঁচলেও তা বাজারে বিক্রি করা যাবে না। এই অবস্থায় আমরা খুবই অসহায়।”

হৈবতপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার জানান,

“সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে বেগুন ক্ষেতের। পানি জমে গেলে গোড়া পঁচে গাছ মরে যায়।”

যশোরের কৃষিবিদ ইউসুফ আলী বলেন,

“বৃষ্টির পর হঠাৎ রোদ উঠলে জমে থাকা পানির নিচে তাপ বাড়ে। এতে গাছের গোড়ায় পচন ধরে এবং ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।”

এদিকে চুড়ামনকাটি গ্রামের মৎস্যচাষি কুদ্দুস সালাম জানান,

“বৃষ্টিতে এলাকার ঘেরগুলো একাকার হয়ে যাচ্ছে। মাছ চলে গেলে একেবারে পথে বসতে হবে।”

অন্যদিকে সবজি ও মাছ চাষের পাশাপাশি সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো। ক্ষেত-ঘেরে পানি জমায় কাজ নেই, আয় নেই। ফলে খাবার জোটানোই এখন তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

স্থানীয় কৃষকদের দাবি—এমন দুর্যোগে সরকারিভাবে জরুরি সহযোগিতা ও ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ নেয়া হোক।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর