Friday, December 5, 2025

দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বন্ধ বেনাপোল-পেট্রাপোল মাসিক বৈঠক, বাণিজ্যে বাড়ছে সংকট

মাসুদুর রহমান শেখ, বেনাপোল: দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরের মাসিক বাণিজ্য বৈঠক। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে এই নিয়মিত বৈঠক আর অনুষ্ঠিত হয়নি। এতে করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে নানামুখী সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, যা বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলমান সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, স্থলপথে বাংলাদেশ-ভারতের মোট বাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশই সম্পন্ন হয় বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মাধ্যমে। আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে শিল্প ও ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল, শিশু খাদ্য, কসমেটিকস ও তৈরি পোশাক। রপ্তানিযোগ্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাট, গার্মেন্টস, কেমিকেল, প্লাস্টিক পণ্য ও মাছ।

২০০৬ সালে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে বাণিজ্যিক জটিলতা সমাধানে মাসিক বৈঠকের প্রথা চালু হয়। তখন কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি দল সীমান্তের শূন্যরেখায় বৈঠকে অংশ নিতেন এবং তাৎক্ষণিক অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব হতো। কিন্তু বৈঠক বন্ধ থাকায় এখন সেইসব সমস্যা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেনাপোল দিয়ে অন্তত ৬০ শতাংশ বাণিজ্য কমে গেছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম বলেন, “বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও জটিলতা নিরসনে এই বৈঠক ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এটি বন্ধ থাকায় সংকট দিন দিন বাড়ছে। দ্রুত আবারও বৈঠক চালু করা প্রয়োজন।”

ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, “বেনাপোল দিয়ে বছরে ভারত থেকে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। এই বিশাল বাণিজ্য সচল রাখতে মাসিক বৈঠক চালু রাখা অত্যন্ত জরুরি।”

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) শামিম হোসেন বলেন, “আগে নিয়মিত শূন্যরেখায় বৈঠক হতো, এখন কোনো সমস্যা হলে কেবল ফোনে যোগাযোগ করতে হয়। তবে সরকারের নির্দেশ পেলেই ভারতের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পূর্বের নিয়মে বৈঠক চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর