শফিয়ার রহমান, মণিরামপুর (যশোর):
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জয়পুর এলাকার কোচবিলে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অবৈধ ঘের উচ্ছেদের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় ঘেরাও করেছেন স্থানীয় শত শত কৃষক। রোববার (২৯ জুন) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
সূত্রে জানা যায়, পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে পরিচিত কোচবিলে অবৈধভাবে মৎস্য ঘের নির্মাণ করে চাষাবাদ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রভাবশালীরা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। সরেজমিন পরিদর্শন ও একাধিক বৈঠকের পরও ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ কৃষকরা ইউএনও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. মাহমুদা আক্তারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা। তবে ঘের মালিকদের অনুপস্থিতিতে ইউএনও ঘের মালিকদের পক্ষাবলম্বন করে বক্তব্য দিলে কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার বাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
ঢাকুরিয়া, ভোজগাতী ও হরিদাসকাটি ইউনিয়নের কৃষি জমি পানি নিষ্কাশন, মাটি খনন ও রক্ষা কমিটির সভাপতি এবং যুবদল নেতা মনির পাটোয়ারী জানান, “তিন মাস আগে ইউএনও’র নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন কৃষকদের পক্ষে হলেও আজ ইউএনও ঘের মালিকদের পক্ষ নিয়েছেন। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নেয়, তবে আমরা নিজেরাই ঘের উচ্ছেদে বাধ্য হবো।”
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক জামায়াত সভাপতি নূরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রাণের দাবি—কোচবিল থেকে অবৈধ ঘের উচ্ছেদ করে কৃষিজমি রক্ষা করা হোক।”
এ সময় কৃষক সাইফুল ইসলাম ইউএনও’র উদ্দেশে বলেন, “আপনি তিন মাস ধরে বলে আসছেন যে, ঘেরগুলো অবৈধ এবং সরকারি অনুমতি ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে। তাহলে আপনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন?” ইউএনও এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে গেলে কৃষকদের ক্ষোভ আরও বাড়ে এবং তারা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, “বিষয়টি নিয়ে সোমবার উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হবে। এরপর ঘের মালিক ও কৃষকদের চারজন করে প্রতিনিধি নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”







