Friday, December 5, 2025

বেহাল লামা–সুয়ালক সড়ক, চরম ভোগান্তিতে জনসাধারণ

মোঃ নাজমুল হুদা, লামা: বান্দরবানের লামা–সুয়ালক সড়কের বেহাল দশা জনদুর্ভোগের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় খানাখন্দ ও ভাঙাচোরা অবস্থার কারণে যান চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রাংশ।

এই সড়কটি লামা উপজেলা সদরকে চকরিয়া, লোহাগাড়া, গজালিয়া, সরই ইউনিয়ন ও বান্দরবান জেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করে। প্রতিদিন শত শত বাস, জীপ, সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এবং ব্যাটারিচালিত যানবাহন এই পথে চলাচল করে।

জানা যায়, লামা বাজার থেকে শুরু করে টংগাঝিরি, ডাবল ব্রিজ ও আন্দারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এলজিইডি কয়েকবার আংশিক সংস্কার করলেও তা টেকসই হয়নি। ফলে প্রতি বছর বর্ষায় সড়কটি আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থানে রাস্তার ঢালাই উঠে গিয়ে পাথর ও ইটের খোয়া বেরিয়ে পড়েছে। পাহাড়ি ঢালে মাটি ধসে গিয়ে কাদা তৈরি হয়েছে, যা যানবাহনের চলাচল প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে। অনেক যাত্রীকে হেঁটে পার হতে দেখা গেছে, কিছু যানবাহন রাস্তায় উঠে ব্যাক করে ফিরে যাচ্ছে।

সিএনজি চালক আলাউদ্দিন, সৈকতসহ অনেক চালক অভিযোগ করেন, এই সড়কে চলাচল এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। টানা বৃষ্টিতে সড়কে কাদা জমে থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে এবং যানবাহনের যন্ত্রাংশ দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কৃষক ও সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তিও বেড়েছে। সময়মতো কৃষিপণ্য বাজারজাত করা যাচ্ছে না, জরুরি প্রয়োজনে রোগীদের চিকিৎসা নিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

সরই ইউনিয়নের বাসিন্দা যুবরাজ ত্রিপুরা, হাসিরাম, সুপিয়া ও মোঃ ইব্রাহীম জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় কাদা জমে যায়, কাপেটিং উঠে গিয়ে রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়। দ্রুত সংস্কার না হলে অবস্থা আরও ভয়াবহ হতে পারে।

স্থানীয় সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইদ্রিস কোং বলেন, “প্রতি বছর বর্ষায় এই রাস্তার একই অবস্থা হয়। গতবার ব্যক্তিগতভাবে কিছু সংস্কার করেছিলাম, তবে এবার সীমাবদ্ধতার কারণে পারছি না। সরকারিভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”

এ বিষয়ে লামা উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু হানিফ জানান, লামা–সুয়ালক সড়কের সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। তবে বর্ষার কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারছেন না।

স্থানীয়দের মতে, দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম শুরু না হলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা পুরো অঞ্চলের যোগাযোগ ও অর্থনীতির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর