মাসুদুর রহমান শেখ, বেনাপোল: বেনাপোল স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের পরীক্ষাগারে টেকনিক্যাল জনবল না থাকায় গত ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে আমদানি করা কৃষিপণ্য ও বীজের মান নির্ণয়ের কার্যক্রম। এতে ভাইরাসযুক্ত বীজ বা নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্য দেশে প্রবেশের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা দেশের কৃষি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি।
জানা গেছে, ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল বন্দরের মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করে। এর মধ্যে অন্তত ১০০ ট্রাকে থাকে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য ও কৃষিবীজ। এসব পণ্যের গুণগত মান ও ভাইরাসমুক্ত কিনা তা পরীক্ষার জন্য ল্যাবের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও বর্তমানে সেটি অচল হয়ে পড়েছে।
বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবে কর্মরত একমাত্র ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানকে প্রকল্প শেষে অন্যত্র বদলি করা হয়। এরপর থেকে পদটি শূন্য থাকায় কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলেন,
“ল্যাব বন্ধ থাকায় খাদ্যদ্রব্য ও বীজ পরীক্ষা করতে হচ্ছে বাইরে, এতে সময় ও খরচ দুই-ই বাড়ছে। দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে ল্যাব চালু করার দাবি জানাই।”
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের বন্দরবিষয়ক সম্পাদক মেহেরুল্লাহ বলেন,
“এই পথে গাছের চারা, ফল ও বীজ আমদানি হয় নিয়মিত। ভাইরাসমুক্ত বীজ আমদানিতে ল্যাব সক্রিয় থাকা জরুরি।”
এ বিষয়ে বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন,
“আমাদের আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব রয়েছে। আগে একজন টেকনিশিয়ান কাজ করতেন, তবে বদলির পর থেকে কার্যক্রম বন্ধ। এখন কিছু পণ্য এনালগ পদ্ধতিতে পরীক্ষা করতে হচ্ছে, যা ধীরগতির ও অনির্ভরযোগ্য। বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাইরাস বা ছত্রাকবাহী বীজ আমদানির মাধ্যমে একদিকে ফসল উৎপাদন কমে যেতে পারে, অন্যদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে নতুন নতুন রোগবালাই। তাই দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে ল্যাব কার্যক্রম পুনরায় চালু করা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।