মো. নাজমুল হুদা, লামা, বান্দরবান: বান্দরবানের লামা উপজেলার মারাইংতং বৌদ্ধ মূর্তি ভাঙচুর ইস্যুকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ এনেছেন ২৮৫ নম্বর সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রো। তিনি দাবি করেছেন, ভান্তে উঃ উইচারা ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ম্রোদের জুম চাষের জমি দখলের ষড়যন্ত্র করছেন।
২৩ মে (শুক্রবার) বিকাল সাড়ে ৫টায় লামা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হেডম্যান চংপাত ম্রো বলেন, “আমি মারাইংতং বৌদ্ধ মূর্তি ভাঙচুরে জড়িত নই। বরং ভান্তে উইচারা নিজেরাই এই ঘটনার নাটক সাজিয়ে আমাকে ও আমার মৌজাবাসীদের দোষী বানাতে চাইছেন।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভান্তে উইচারা মারাইংতং এলাকায় রিসোর্ট তৈরির জন্য ম্রোদের দীর্ঘদিনের দখলীয় জুমভূমি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। চাঁদা না দেওয়ায় ভান্তের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত গত ৪ এপ্রিল তার নির্মিত জুমঘরগুলো ভাঙচুর করে এবং প্রায় ২১ লক্ষ টাকার সম্পদ লুট করে নেয়।
চংপাত ম্রো বলেন, “এই ঘটনার পর আমি লামা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়। তদন্তে দেখা যায়, সেখানে কোনো বুদ্ধ মূর্তি ছিল না, বরং আমার ঘরবাড়ি ভাঙার চিহ্ন স্পষ্ট।”
তিনি জানান, ঘটনাটি নিয়ে আদালতে ফৌজদারি মামলা করেছেন এবং প্রশাসন বিরোধপূর্ণ এলাকায় নতুন স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দিলেও তা অমান্য করে ভান্তে উঃ উইচারা একটি টেবিল সদৃশ নতুন পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেন।
চংপাত ম্রো জানান, সাবেক সংসদ সদস্য সাচিংপ্রু জেরীর উদ্যোগে এক বৈঠকে ভান্তে উইচারাকে মারাইংতং ধম্ম জাদী পরিচালনা কমিটি থেকে বাদ দিয়ে থোয়াইনুঅং চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও খামলাই স্রোকে সদস্য সচিব করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। বৈঠকে ভান্তের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, সেই ক্ষতিপূরণ না দিতে এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ভান্তে উইচারা অসম্পূর্ণ বুদ্ধ মূর্তি নির্মাণ করে নিজেরাই সেটি ভেঙে নাটক সাজিয়েছেন।
চংপাত ম্রো প্রশাসনের প্রতি এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ঘটনাটি বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন, আদালত ও জনসাধারণের গভীর নজরে রয়েছে।







