Friday, December 5, 2025

বাংলাদেশে স্টারলিংকের অর্ডার, সরঞ্জামের খরচ ৪৭ হাজার টাকা

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছে। মঙ্গলবার (২১ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও স্টারলিংক কর্তৃপক্ষ। বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে কাজ শুরু করেছে।

স্টারলিংকের সেবা নিতে আগ্রহীদের সরাসরি প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘রেসিডেনশিয়াল’ অপশন বেছে নিতে হবে। স্থান নির্বাচন ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অনলাইনে অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে অর্ডার সম্পন্ন করতে হবে। তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে সেট গ্রাহকের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। নিজেই এটি সহজে সেটআপ করা যাবে বলে জানিয়েছে স্টারলিংক।

স্টারলিংকের রেসিডেন্স প্যাকেজে মাসিক খরচ ৬ হাজার টাকা এবং রেসিডেন্স লাইট প্যাকেজে খরচ ৪ হাজার ২০০ টাকা। তবে এককালীন সরঞ্জাম খরচ ৪৭ হাজার টাকা, যার মধ্যে রয়েছে রিসিভার, কিকস্ট্যান্ড, রাউটার, তার এবং পাওয়ার সাপ্লাই।

স্টারলিংকের একটি সেট থেকে ২০ থেকে ৫০ মিটার পর্যন্ত ইন্টারনেট পাওয়া যাবে, গ্রামে যা ৫০ থেকে ৬০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। ফলে সমবায় বা গ্রুপ ভিত্তিতে ব্যবহার করাও সম্ভব। সরকার বলছে, দেশে এখনও মাত্র ৩০% মোবাইল টাওয়ার ফাইবারে সংযুক্ত। স্টারলিংকের মাধ্যমে এক সেটআপেই নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে যাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কলে আলোচনা করেন এবং ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সেবা চালুর নির্দেশনা দেন। এরপর দ্রুত স্টারলিংককে বিনিয়োগ নিবন্ধন ও বিটিআরসি থেকে ১০ বছরের লাইসেন্স দেওয়া হয়।

সরকার জানিয়েছে, স্টারলিংক আপাতত বিদেশি গেটওয়ে ব্যবহার করে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। ৯০ দিনের মধ্যে দেশের নিজস্ব গেটওয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকবে না। সরকার আইনানুগ নজরদারির অধিকারও নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান ও শ্রীলঙ্কায় স্টারলিংক সেবা চালু করেছে। সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম যৌক্তিক এবং আঞ্চলিক দামের তুলনায় কম। ভবিষ্যতে প্রতিবেশী দেশগুলোর দামের সঙ্গে মিলিয়ে পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে।”

সরকার জানিয়েছে, অ্যামাজন কুইপার, ওয়ানওয়েব, স্যাটেলয়েটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সেবা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চীনের জিডব্লিউসহ যে কেউ একই নিয়মে বাংলাদেশে কাজ করতে পারবে।

উচ্চগতির, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছানোর সম্ভাবনায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে স্টারলিংক। সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও অনুমোদনের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি এখন বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে। এখন দেখার বিষয়—গ্রাহক সাড়া এবং সেবার মান কেমন হয়।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর