Friday, December 5, 2025

প্রতিদিন ৬ কোটি টাকার আম বিক্রি হয় শার্শার বাগুড়ি বেলতলা বাজারে

মাসুদুর রহমান শেখ, বেনাপোল: যশোরের শার্শা উপজেলার বাগুড়ি বেলতলা এখন দেশের অন্যতম বড় আমের পাইকারি বাজারে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এই বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মণ আম, যার আর্থিক পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা। দেশজুড়ে আমের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এখানকার আম যাচ্ছে বিদেশেও।

প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে আম কেনাবেচা। বাজার ঘিরে গড়ে উঠেছে ৮৬টি আড়ত, যার মধ্যে ২০টির মতো আড়ত সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার অংশে অবস্থিত। গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাতি, গোবিন্দভোগ, ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপাল খাস, বৈশাখী, আম্রপালি প্রভৃতি জাতের আম পাওয়া যায় এই বাজারে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

বাজারের প্রচার সম্পাদক মন্টু জানান, এখানে ফরমালিনমুক্ত আম বিক্রি হয় এবং কোন রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াই ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। অতীতে আম মৌসুমে লক্ষাধিক টাকা চাঁদাবাজি হলেও বর্তমানে তা সম্পূর্ণ বন্ধ। আড়তদাররা শতকরা ৩ টাকা কমিশনে কাজ করছেন এবং কৃষকরা নগদ টাকা নিয়ে ঘরে ফিরতে পারছেন। বাজারে আম চাষিদের কাছ থেকে মাত্র শতকরা ৫ টাকা হারে খাজনা নেওয়া হয়।

বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে ৬ মে থেকে আম বিক্রি শুরু হয়েছে। বর্তমানে গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাতি, গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গোপাল খাস বাজারে থাকলেও ২১ মে থেকে হিমসাগর, ২৮ মে থেকে ল্যাংড়া এবং ৬ জুন থেকে আম্রপালি ও মল্লিকা বাজারে আসবে।

বাজারের সভাপতি মাহমুদ হোসেন জানান, এখানে রয়েছে তিন গ্রেডের আড়ত — এ, বি ও সি। এ গ্রেডের আড়তদাররা প্রতিদিন ১০-১৫ লাখ টাকার, বি গ্রেডেররা ৬-১০ লাখ এবং সি গ্রেডের আড়তদাররা ৩-৪ লাখ টাকার আম বিক্রি করেন। মূলত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কার কত ভালো যোগাযোগ রয়েছে, তার ভিত্তিতেই আড়তের গ্রেড নির্ধারণ হয়।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী নাজিব হাসান বলেন, “শার্শার বাগুড়ি বেলতলা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ আমবাজার। বাজারে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে।”

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর