# এক সপ্তাহে ৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩, আহত বহু
মহব্বত আলী, চুড়ামনকাটি প্রতিনিধি
“একটি দুর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না”—এই কথাটি যেন প্রতিদিন প্রমাণিত হচ্ছে যশোর-চৌগাছা সড়কে। ৫ দিনের ব্যবধানে এই ব্যস্ততম সড়কে ৪টি ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন, মারা গেছে একটি গরু এবং আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকেই এই সড়কে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের বাজারগুলোর মানুষেরা প্রতিদিন চিন্তায় থাকে—কখন আবার দুর্ঘটনার খবর আসে!
চৌগাছা সড়কের আমবটতলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পর থেকে এ সড়কের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাস, ট্রাক, নসিমন, করিমন, সিএনজি, ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহন দ্রুতগতিতে চলাচল করে। ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন।
গত ৫ দিনের দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে সন্ধ্যার পরে, যার সবকটিতেই ছিল বেপরোয়া গতির যানবাহন জড়িত।
সবশেষ দুর্ঘটনা ঘটে শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যায় হুজরাপাড়া এলাকায়। গরু বোঝাই নসিমনের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ঋতু খাতুন (১৮)। তিনি চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের জগহাটি গ্রামের আক্তার হোসেনের মেয়ে। দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক গুরুতর আহত হন এবং একটি গরু মারা যায়।
এর আগে ৩০ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে দোগাছিয়া বাজারের কাঁঠালতলা ইটভাটার পাশে ছাতিয়ানতলা গ্রামের ব্যবসায়ী উজ্জ্বল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন। গুরুতর আহত হন তাঁর মোটরসাইকেলে থাকা দুই আরোহী ও এক ভ্যানচালক।
৪ মে রাত ৮টার দিকে জগহাটি রুলপাড়া এলাকায় ধানবোঝাই ট্রলির সঙ্গে সিএনজির সংঘর্ষে চৌগাছা বাজারের মুজিব উদ্দীন আহমেদের ছেলে সেলিম রেজা নিহত হন। আহত হন আরও ৪ জন।
এছাড়া কয়েক দিন আগে একই স্থানে দুপুরে দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন ২ জন।
এ বিষয়ে সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আব্দুর রউফ বলেন, “ড্রাইভারদের অসাবধানতা এবং অতিরিক্ত গতির কারণেই এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা সর্বদা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট।”
চুড়ামনকাটি ইউপি চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন বলেন, “রাস্তা ভালো হওয়ায় সবাই আগে যাওয়ার প্রবণতায় থাকে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অদক্ষ ড্রাইভারদের অবহেলা, যার ফলেই দুর্ঘটনা বাড়ছে।”
চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার মিজানুর রহমান বলেন, “সড়কে কোনো গতিরোধক নেই, নেই ট্রাফিক ব্যবস্থাও। এর সঙ্গে অদক্ষ ড্রাইভারদের অসতর্কতা যোগ হয়ে দুর্ঘটনা বাড়ছে। ট্রাফিক ব্যবস্থা এবং সচেতনতাই পারে এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে।”







