Friday, December 5, 2025

এতিম ম্রো শিক্ষার্থী অপহরণ, উৎকণ্ঠায় পরিবার ও সম্প্রদায়

নাজমুল হুদা, বান্দরবান প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি থেকে অপহৃত পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর একজন হলেন বান্দরবানের আলিকদম উপজেলার সীমান্ত এলাকার ম্রো তরুণ লংঙি ম্রো। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

লংঙি ম্রোর বাড়ি কুরুক পাতা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিয়াদুই পাড়া গ্রামে, যা মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা একটি দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে লংঙি তৃতীয়। তার বাবা গত বছর মারা যান, ফলে তিনি এতিম। বড় ভাই লেখাপড়া না করে জুমচাষ করে লংঙিকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছেন। অপহরণের খবর পেয়ে পরিবারে চলছে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

কুরুক পাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, “এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম। আলিকদম থেকে গাড়িতে এক ঘণ্টায় পোয়ামুহুরী পৌঁছে, সেখান থেকে একদিন পায়ে হেঁটে নিয়াদুই পাড়ায় যেতে হয়। আমরা লংঙির অপহরণের খবর তার মা ও ভাইকে জানিয়েছি। পুরো ম্রো সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন।”

অপহৃত অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন—চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের মৈত্রী ময় চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা এবং চারুকলা বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরা। তারা সবাই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, ১৬ এপ্রিল সকালে কুকিছড়া এলাকা থেকে খাগড়াছড়ি সদরের পথে যাওয়ার সময় গিরিফুল নামক এলাকায় একটি টমটম থামিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পাঁচ শিক্ষার্থী ও চালককে অপহরণ করে। পরে চালককে ছেড়ে দিলেও শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়া হয়নি।

ম্রো সোশ্যাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রাংলাই ম্রো বলেন, “কেন, কী কারণে এই শিক্ষার্থীদের অপহরণ করা হয়েছে তা আমরা জানি না। ম্রো সোশ্যাল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আমরা তাদের অবিলম্বে সুস্থ দেহে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এ ছাড়া বান্দরবানের ম্রো সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ একযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করে লংঙি ম্রোসহ পাঁচ শিক্ষার্থীর দ্রুত সন্ধান ও নিরাপদ মুক্তির জোর দাবি জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর