বিশেষ প্রতিনিধি: যশোরের অভয়নগরে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা ফিরোজ গাজীর বিরুদ্ধে। তিনি নওয়াপাড়া রাজঘাট সাভারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং রাশেদ গাজীর ছেলে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সালমান শেখ অভয়নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সালমান শেখ ও তার পরিবার বিএনপির সমর্থক। এর ফলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাঁকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়—তার উপর হামলা ও মিথ্যা মামলার কথাও অভিযোগে উল্লেখ আছে।
পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সালমানকে বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় তার পরিবার। এ খবর পেয়ে প্রতিবেশী ফিরোজ গাজী সালমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং জানান, তিনি ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে সৌদি আরবে কাজের ভিসায় পাঠাতে পারবেন। প্রথমে ২ লাখ টাকা অগ্রিম দিতে হবে, বাকি টাকা ভিসা হাতে পাওয়ার পর দেওয়া যাবে—এমন শর্ত দেন তিনি।
২০২৩ সালের ২ মার্চ সালমান সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ফিরোজ গাজীকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করেন। ফিরোজ পাসপোর্ট তৈরি করতে বলেন, যার ভিত্তিতে সালমান ১৮ জুন ২০২৩ তারিখে পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন । এরপর ফিরোজ বিভিন্ন অজুহাতে আরও ৫০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু পরে তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং ভিসা বা বিদেশ পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা করেননি। টাকা ফেরত চাইলে উল্টো হুমকি দিয়ে বলেন, “নাশকতা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবো।”
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ফিরোজ গাজী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তবে সম্প্রতি তিনি এলাকায় ফিরে আবারও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী, ফিরোজ গাজী একজন ধুরন্ধর প্রকৃতির মানুষ। তাঁর নিজের বোনদের জমি বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় এক ভ্যানচালক মুস্তাইনসহ আরও কয়েকজনের কাছ থেকেও টাকা নিয়ে তা পরিশোধ না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফিরোজ গাজী বলেন, “আমি কাউকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে টাকা নেইনি। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর বোনদের জমির টাকা আমার ব্যক্তিগত বিষয়।” অন্যান্য আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি চুপ করে থাকেন।
অভয়নগরের গাজীপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (আইসি) সঞ্জিত কুমার জানান, “সালমান শেখ নামের এক ব্যক্তির অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”







