শফিয়ার রহমান: যশোরের মণিরামপুরে প্রদীপ বিশ্বাস নামের এক উদ্ভাবক তৈরি করেছেন কচুরিপানা পরিষ্কারের এক বিস্ময়কর যন্ত্র। ডিঙ্গি নৌকার ওপর বসানো বিশেষ এই যন্ত্রটি জলাশয়ের ঘন কচুরিপানা অনায়াসে কেটে দুই দিকে ছড়িয়ে দেয়। এই উদ্ভাবন সাড়া ফেলেছে স্থানীয়দের মধ্যে। জানা গেছে, গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ইতোমধ্যেই প্রদীপের তৈরি এই যন্ত্রটি কিনে নিয়েছে।
প্রদীপ বিশ্বাস মণিরামপুর উপজেলার কুচলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার হাত ধরেই যন্ত্র তৈরির প্রতি আগ্রহ জন্মেছিল প্রদীপের। সুন্দলী বাজারে তার নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ রয়েছে।
সম্প্রতি সুন্দলী বাজারে প্রদীপের ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা যায়, তিনি অত্যন্ত মনোযোগের সাথে কাজ করছেন। প্রদীপ জানান, তার যন্ত্রটি স্থানীয় এক মৎস্য খামারি কচুরিপানা পরিষ্কারের জন্য ভাড়া নিয়েছেন। এরপর প্রদীপ নিজেই সেই খামারে গিয়ে যন্ত্রটির কার্যকারিতা দেখান।
খামারের দায়িত্বে থাকা আদিত্য মন্ডল জানান, কচুরিপানার কারণে মাছ ধরা যাচ্ছিল না। প্রদীপের যন্ত্র ভাড়া করে কচুরিপানা পরিষ্কার করায় তারা উপকৃত হয়েছেন।
প্রদীপ বিশ্বাস জানান, ভবদহের জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার খাল-বিল ও নদীতে কচুরিপানার আধিক্য দেখা দেয়। এই সমস্যা সমাধানে তিনি যন্ত্রটি তৈরি করেছেন। তার দাবি, এই যন্ত্র কচুরিপানা পরিষ্কারে ব্যাপক সাড়া ফেলবে।
প্রদীপ জানান, প্রথমে ২২ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন, এঙ্গেল, পাত, কাঠ, চেইন, পেনিয়াম, গিয়ারবক্স, প্লেনসিড ও ১৯টি বিচালি কাটা ছুরি দিয়ে তৈরি যন্ত্রটি ঘন কচুরিপানা কাটতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যেত। পরে তিনি ১১ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন নৌকা চালানোর জন্য ও ২২ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন কচুরিপানা কাটার জন্য ব্যবহার করেন এবং ৯টি ছুরি বিশেষ কায়দায় স্থাপন করেন। প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করে এক মাস চেষ্টার পর যন্ত্রটি সম্পূর্ণ হয়। তিনি আরও জানান, কেটে ফেলা কচুরিপানা জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। প্রদীপ বিশ্বাস সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও উন্নত মানের যন্ত্র তৈরি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।