কাজ করলে স্বীকৃতি, পদক কিংবা অর্থ মিলবেই। তবে বন্ধুত্বের ঊর্ধ্বে কিছুই নয়—এ কথাই প্রমাণ করলেন অভ্র’র অন্যতম নির্মাতা মেহেদী হাসান খান। একুশে পদকে ভূষিত হয়ে একা পদক গ্রহণ করতে রাজি হননি তিনি। কারণ, অভ্র তৈরিতে তার তিন বন্ধু প্রথম থেকেই অবদান রেখেছেন। তাদের অবদানকে অস্বীকার করে একা পদক নেওয়াকে তিনি ঠিক মনে করেননি।
সরকার তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে মেহেদী হাসান খানের সঙ্গে তার তিন বন্ধুকেও যৌথভাবে একুশে পদক দেওয়ার ঘোষণা দেয়। বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।
এ বিষয়ে মেহেদী হাসান খান বলেন, “আমি একা অভ্র’র নির্মাতা নই। আমার সঙ্গে আরও তিনজন বন্ধু শুরু থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাদের বাদ দিয়ে আমি একা এই স্বীকৃতি নিতে পারি না।”
তার বন্ধুরাও জানালেন, একুশে পদক নয়, তাদের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন মেহেদী হাসানের মতো একজন বন্ধুর পাশে থাকা। তাদের কাছে এই বন্ধুত্বই জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার।
বাংলাদেশে সাধারণত কৃতিত্ব ভাগাভাগি না করার সংস্কৃতি প্রচলিত থাকলেও, মেহেদী হাসান খান তার সততা ও নির্লোভ মানসিকতার কারণে অনন্য হয়ে উঠেছেন।
এদিকে, সরকারকেও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে যৌথভাবে পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য প্রতিভাবানদেরও স্বীকৃতি পাওয়ার পথ সুগম করবে। দলান্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে এমন স্বীকৃতি প্রদান নতুন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সর্বমহলে।
বাংলা ভাষাকে উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে অভ্র’র যে অবদান, তা আগামীর প্রজন্ম অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করবে। মেধাবীদের যথাযথ মূল্যায়ন যে সত্যিকার অর্থেই সম্ভব, তা প্রমাণ করল এই পদকপ্রাপ্তি।