Wednesday, February 19, 2025

চীনা এআই চ্যাটবট ‘ডিপসিক’ ঝড় তুলছে বিশ্ববাজারে

বিশ্বের প্রযুক্তি বাজারে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে চীনা এআই কোম্পানি ডিপসিক। তাদের এআই-চালিত চ্যাটবট ‘ডিপসিক’, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে উন্মোচন করা হয়, দ্রুতই অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া বিনামূল্যের অ্যাপে পরিণত হয়েছে। এই সাফল্য শুধু প্রযুক্তি জগতে নয়, শেয়ারবাজারেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে।

ডিপসিক দক্ষিণ-পূর্ব চীনের হাংঝৌ ভিত্তিক একটি এআই কোম্পানি। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি তাদের প্রথম চ্যাটবট অ্যাপটি ১০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে উন্মুক্ত করে। লিয়াং ওয়েনফেং, ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা, কম খরচে চিপ ব্যবহারের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি তৈরি করে সাফল্যের নজির স্থাপন করেছেন।

ডিপসিক দাবি করেছে, তাদের এআই মডেল মার্কিন প্রযুক্তির সমমানের, কিন্তু খরচ অনেক কম। মাত্র ৬০ লাখ ডলারে তৈরি এই অ্যাপটি মার্কিন কোম্পানিগুলোর বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডিপসিকের জনপ্রিয়তা এবং কম খরচে কার্যকর এআই তৈরির বিষয়টি মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে, পুঁজিবাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ২৭ জানুয়ারি নাসডাকের সূচক ৩ শতাংশের বেশি কমে যায়।

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চিপ নির্মাতা এনভিডিয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়। এনভিডিয়ার শেয়ারমূল্য ১৭ শতাংশ কমে গিয়ে তাদের বাজারমূল্য এক দিনে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে। এই পতনের ফলে এনভিডিয়া বিশ্বের তৃতীয় মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।

ডিপসিক তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং কম শক্তিশালী চিপ ব্যবহার করে অত্যাধুনিক এআই তৈরি করেছে। এনভিডিয়ার উন্নত চিপগুলোর বিকল্প ব্যবহার করে তারা প্রমাণ করেছে যে, বড় বাজেট ছাড়াও এআই উন্নয়ন সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সাফল্য এআই ক্ষেত্রে নতুন একটি যুগের সূচনা করেছে এবং শক্তিশালী চিপের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করতে পারে।

ডিপসিকের সাফল্য শুধু চীনা এআই প্রযুক্তির অগ্রগতি নয়, বরং এটি মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর দীর্ঘদিনের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করেছে। মার্কিন ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট মার্ক অ্যান্ড্রেসেন ডিপসিককে “এআই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিস্ময়কর অগ্রগতি” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ডিপসিকের উত্থান এআই দুনিয়ায় নতুন প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর প্রভাব শুধু প্রযুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

- বিজ্ঞাপন

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর