যশোর শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে বসানো ৬২টি সিসি ক্যামেরার মধ্যে বর্তমানে মাত্র ৮টি সচল রয়েছে। বাকি ৫৪টি ক্যামেরা বিকল হয়ে পড়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়লেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ এখনও প্রশ্নবিদ্ধ।
২০১৭ সালে তৎকালীন মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর উদ্যোগে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে শহরজুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। সেই সময় পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ক্যামেরাগুলোর মনিটরিং বুথ স্থাপন করা হলেও কয়েক বছরের ব্যবধানে ক্যামেরাগুলো বিকল হয়ে যায়। ২০২৩ সালে ছয় লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬২টি নতুন ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলোও এখন অকেজো।
ক্যামেরাগুলো বিকল হওয়ায় শহরে চুরি, ছিনতাই, এবং গুলি করে হত্যার চেষ্টা বেড়েছে বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, “ক্যামেরাগুলো সচল থাকলে ব্যবসায়ীরা অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারত। কিন্তু এখন চুরি-ডাকাতি বাড়ায় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছেন।”
পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ জানিয়েছেন, অপরাধ দমনে সিসি ক্যামেরার গুরুত্ব অপরিসীম। তবে পৌরসভার ক্যামেরাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে থাকায় অপরাধীদের শনাক্তে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ক্যামেরাগুলো সচল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
পৌরসভা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম জানান, “ক্যামেরাগুলো সচল করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। তবে পৌরসভার একার পক্ষে এটি করা সম্ভব নয়। ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”
সনাক যশোরের সভাপতি অধ্যাপক শাহীন ইকবাল বলেন, “সিসি ক্যামেরা অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও মনিটরিংয়ের অভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি অর্থহীন হয়ে পড়েছে। এটি তদারকির জন্য একটি স্বতন্ত্র টিম থাকা জরুরি।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সদস্য সচিব জেসিনা মুর্শিদ প্রাপ্তি বলেন, “ক্যামেরাগুলোর নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করা প্রয়োজন। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে নাগরিক নিরাপত্তার ঝুঁকি আরও বাড়বে।”
নাগরিকদের দাবি, যশোর শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে সিসি ক্যামেরাগুলো সচল করা হোক। এ ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি একটি স্থায়ী মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান তারা।
সুত্র: গ্রামের কাগজ