Saturday, December 6, 2025

দেশে বেকারত্বের হার কিছুটা বেড়েছে: বিবিএসের ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ

বাংলাদেশে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের মধ্যে দেশে ২৬ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বেকার ছিলেন বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত সর্বশেষ ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপে উঠে এসেছে।

বিবিএস প্রথমবারের মতো বেকারত্ব নির্ধারণে ১৯তম আইসিএলএস (পরিসংখ্যানবিদদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন) পদ্ধতি প্রয়োগ করেছে। এই নতুন পদ্ধতির আওতায়, যাঁরা উৎপাদনশীল কোনো কাজে জড়িত থাকলেও পণ্য বা সেবা বাজারজাত করেন না, তাঁদের কর্মে নিয়োজিত হিসেবে ধরা হয়নি। বরং তাঁরা বেকার বলে বিবেচিত হয়েছেন।

বিবিএসের পুরোনো পদ্ধতি, ১৩তম আইসিএলএস অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৫০ হাজার। আগের প্রান্তিকে যা ছিল ২৬ লাখ ৪০ হাজার। এই হিসাবে বেকারত্ব কমলেও নতুন পদ্ধতিতে বেকারের সংখ্যা ২০ হাজার বেড়েছে।

জরিপে বেকার হিসেবে তাঁদের ধরা হয়েছে, যারা আগের সাত দিনে এক ঘণ্টাও কোনো আয়জনক কাজ করেনি অথচ কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং জরিপের পরবর্তী দুই সপ্তাহেও কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া বিগত ৩০ দিনে মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কাজ খুঁজেছেন, এমন ব্যক্তিদেরও বেকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

১৩তম আইসিএলএস পদ্ধতি অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে দেশের মোট শ্রমশক্তির পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ৬ লাখ। এর মধ্যে ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার পুরুষ এবং ২ কোটি ২৫ লাখ ৭০ হাজার নারী।

জরিপ অনুযায়ী, ৬ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার নারী-পুরুষ এক ঘণ্টার মজুরির বিনিময়ে কাজ করেছেন। এর মধ্যে ৪ কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার পুরুষ এবং ২ কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার নারী কর্মে নিয়োজিত ছিলেন।

যাঁরা কর্মে নিয়োজিত নন এবং বেকার হিসেবেও বিবেচিত নন, তাঁরা শ্রমশক্তির বাইরে হিসেবে ধরা হয়। এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছেন শিক্ষার্থী, অসুস্থ ব্যক্তি, অবসরপ্রাপ্ত, গৃহিণী এবং কাজ করতে অনিচ্ছুক ব্যক্তি। সেপ্টেম্বরে এ সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১৪ লাখ ৪০ হাজার।

প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ কর্মসংস্থানের বাজারে প্রবেশ করেন। এদের মধ্যে ১৩-১৪ লাখ কর্মসংস্থান খুঁজে পান, আর বাকিরা বিদেশে কাজের জন্য পাড়ি জমান। গত দুই দশক ধরে দেশে বেকারের সংখ্যা গড়ে ২৪-২৮ লাখের মধ্যেই অবস্থান করছে।

বিবিএসের একজন কর্মকর্তা জানান, নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী হিসাব করায় বেকারত্বের পরিসংখ্যানে কিছু পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। তবে এ পদ্ধতি বাস্তবসম্মত তথ্য দিতে কার্যকর হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর