চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শুক্লা দে (৩৮) নামে এক বেসরকারি ঋণ প্রদান প্রতিষ্ঠানের মাঠ কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বজনদের অভিযোগ, ঋণের কিস্তি আদায়ে প্রবল চাপ এবং বেতন কর্তনের কারণে হতাশ হয়ে শুক্লা আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী সিদুল পাল চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।
শুক্লা দে রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের কানুনগোপাড়া শাখায় মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে ২০২৩ সালের মে মাসে যোগ দেন। তিনি স্থানীয়দের কাছ থেকে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায় করতেন। তবে গত আগস্ট থেকে কিস্তি আদায়ে ধীরগতি দেখা দেয়। এলাকাবাসীর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে হতো তাঁকে।
শুক্লার স্বামী অভিযোগ করেন, কিস্তি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারায় সংস্থার ম্যানেজার কাঞ্চন দেবনাথসহ অন্যান্যরা তাঁকে মানসিক চাপ দিতেন। এমনকি বেতন থেকে অনাদায়ী কিস্তির অর্থ কেটে নেওয়া হচ্ছিল।
অভিযোগ অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে শুক্লার ১৫ হাজার টাকার বেতন থেকে ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে তাঁকে পটিয়ার ধলঘাট এলাকায় বদলি করা হয়। এসব কারণে শুক্লা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। শনিবার সন্ধ্যায় রান্নাঘরের বিমে ওড়না পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
রোববার বোয়ালখালী থানায় শুক্লার স্বামী চারজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন রূপসা সমবায়ের ব্যবস্থাপক কাঞ্চন দেবনাথ (৪৫), কর্মী নন্দন (৪০), চিনু বিশ্বাস (৪২) এবং পলাশ নাথ (৪৩)।
বোয়ালখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খায়রুল ইসলাম জানান, আত্মহত্যার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
রূপসা সমবায়ের ব্যবস্থাপক কাঞ্চন দেবনাথের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ ও হেনস্তার ফলে শুক্লার মতো আরও অনেকের জীবনে কী ধরনের প্রভাব পড়ে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।







