নিজস্ব প্রতিবেদক- স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদদের স্মরণে আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সারাদেশের ন্যায় যশোরেও ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি গ্রুপ। অপর গ্রুপ একইদিন বিকাল ৩টায় কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ওই গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন রাশেদ খান নামে এক শিক্ষার্থী। এদিকে একই দিনে পৃথক দুটি গ্রুপের পৃথক সময়ে কর্মসূচির ডাকে যশোরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে এসেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের জেসিনা মূর্শীদ প্রাপ্তি, মাসুম বিল্লাহ, নূর ইসলামের নেতৃত্বে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে জড়ো হয় যশোরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এরপর সেখান থেকে শুরু হওয়া ‘শহীদি মার্চ’টি যশোর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে যশোরের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য শেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র- আন্দোলনে নিহত ছাত্র জনতার স্বরণে এক মিনিট নিরবতা পালন ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল করে কর্মসূচি শেষ হয়।

যশোর জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব দান কারী জেসিনা মুর্শীদ প্রাপ্তি বলেন, গতকাল বুধবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্র ঘোষিত ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণার পর আমরা সন্ধ্যা ৬টার দিকে যশোরে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালনের সময় এবং স্থান ঘোষণা করি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী শহীদের প্রতি স্বরণে আমরা যেমন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী পালন করি ঠিক তেমনই ২০২৪ সালের জুলাই মাসের মুক্তিকামী শহীদদের স্মরণ আজকে আমাদের এই “শহীদি মার্চ” কর্মসূচী পালন করছি। ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এবং ছাত্র ও সাধরণত জনগণের হত্যার বিচার চেয়ে আমরা রাজপথে আছি। ২০২৪ এর জুলাইয়ের মুক্তিকামী শহীদদের প্রতি আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু ভবিষ্যত পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা খুবই শীঘ্রই তা বাস্তবায়ন চাই।’
গ্রুপিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘোষণা দেখে আমাদের অপর গ্রুপ ৩ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় কর্মসূচি ঘোষণা করে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের অপর গ্রুপটি নিয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কারণ গত ১৫ই আগস্ট কেন্দ্রের কর্মসূচি ছিল আন্দোলনে আহতদের খোঁজ খবর নেওয়া। আমাদের ওপর গ্রুপটি ওইদিন কেন্দ্রের কর্মসূচি অমান্য করে বাউল সংগীতের আয়োজন করে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করায় আমরা আলাদা হয়ে যাই। তবে আমরা সকলে একসাথে দেশ সংস্কারের কাজ করতে চাই। আমাদের মধ্যে কোন প্রতিহিংসা চাই না।’
যশোর জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব দান কারী মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে যশোরে শহীদি মার্চ ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করি আমরা। আমাদের প্রিয় ভাই ও বোনদের রক্তে কেনা নতুন বাংলাদেশে দূর্নীতি, বৈষম্য, অবিচার মানা হবে না। কেউ স্বৈরাচারী মনোভাব পোষণ করলে তাদের শুধরাতে হবে ছাত্র সমাজ এখনও মাঠ ছাড়েনি। আমরা শহীদি ভাইদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি তাদের রক্ত বৃথা যেতে দিব না৷ খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানাই। শহীদি ভাই ও বোনদের জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক, আমিন।’
যশোর জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব দান কারী মোঃ নুর ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। এই রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য আমরা সবাই একতাবদ্ধ থাকবো। আমরা দেশকে ভালোবাসি। দেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছি এবং আগামীতে থাকব।
রাতদিন সংবাদ,জয়-







