মুন্সিগঞ্জ সদরের ইদ্রাকপুর এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশুসহ ৪ জন দগ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এদিকে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে শহরের ইদ্রাকপুর এলাকার সদর উপজেলা সংলগ্ন থানা কাউন্সিল মোড়ের একটি ভবনের পাঁচ তলা ফ্লাটে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জানান, একটি আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে ফ্ল্যাটটির সবগুলোর রুম প্রায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
জানা গেছে, এই ভবনটি নির্মাণ কাজ সদ্য শেষ হয়। এই ভবনের মোট ১৪টি ফ্লাটের মধ্যে ১২টি ফ্লাট ভাড়া হয়েছে। এ ফ্লাটের পাঁচ তলার ১২ নাম্বার ফ্লাটে পরিবারসহ ভাড়া থাকতেন মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেন্টারাল প্রোগ্রাম (ওসিসি) কর্মকর্তা রিজভী আহমেদ।
এ ঘটনায় দগ্ধরা হলেন- রিজভি আহমেদ (৪৫), তার মা সাহিদা বেগম (৬৫), তার স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩৫) ও আড়াই বছরের শিশু রায়ান। দগ্ধদের উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান।
স্থানীয়রা জানায়,ভোরে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় বিকট শব্দ শুনতে পাই। ভূমিকম্প হচ্ছে ভেবে আমরা ফ্ল্যাট থেকে নিচে নেমে আসি। দেখি এখানের একটি ভবনের পঞ্চম তলায় আগুন জ্বলছে। ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস ও আশেপাশের লোকজন দ্রুত এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।
এ ব্যাপারে ওই বাড়ির মালিকের ছেলে মোঃ শাকিল বলেন, আমরা এই ভবনটির নির্মাণ কাজ গত তিন মাস আগে শেষ করেছি। গত মাসে ১২টি ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিস্ফোরণ হয়ে আমাদের ভবনের দ্বিতীয় তলা হতে পঞ্চম তলা পর্যন্ত দরজা জানালা সব ভেঙে গেছে।
এ ব্যাপারে ওই ভবনের চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া আমিনুল ইসলাম বলেন, সকাল বেলা ঘুমাইতে ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। শুনেই দেখি যে আমাদের ফ্ল্যাটের দরজা জানালা ভাঙা। দৌড়ে নিচে নেমে দেখি পাঁচ তলায় আগুন জ্বলতেছে।
তয় তলার ভাড়াটিয়া মোহাম্মদ আসাদ বলেন, সকালে ঘুমাইতেছিলাম। বিকট শব্দ শুনতে পাই। ঘুম থেকে আতঙ্কে উঠে দেখি আমাদের ফ্ল্যাটের দরজা জানালা সব ভেঙে গেছে। দৌড়ে নিচে নেমে দেখি পাঁচ তলায় আগুন জ্বলতেছে।
মুন্সিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মো. আবু ইউসুফ বলেন,খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনা স্থলে যাই। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রায় ২০ মিনিট চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক ত্রুটি অথবা কোন যন্ত্র থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়।
এতো ব্যপক ক্ষতি, কোন বিস্ফোরক দ্রব্য বা গ্যাস লিকেজ থেকে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা বিস্ফোরক অথবা গ্যাসের কোন আলামত পাইনি। আমাদের ধারনা,কক্ষের সব দরজা জানালা বন্ধছিল। আগুন আবদ্ধ কক্ষে থেকে ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় করে। সে পরিবারটি যখন দরজা খুলে, তখন কক্ষে অক্সিজেন প্রবেশ করে বিস্ফোরণ ঘটে।এ কারণে ওই ফ্লাটসহ সম্পূর্ণ ভবনের সবকটি কক্ষ ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক এস এম ফেরদৌস বলেন, সকালে দগ্ধ অবস্থায় চারজনকে নিয়ে আসলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে এক বৃদ্ধার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক ছিল।
রাতদিন ডেস্ক/জয়-০৩







