সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: কাঁদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দশভুজা দেবী দূর্গার প্রতিমায় ভরে উঠেছে সাতক্ষীরার প্রতিটি মণ্ডপে।
তবে এই প্রথম সাতক্ষীরায় ব্যতিক্রমী ধানের প্রতিমা নজর কেড়েছে ভক্তবৃন্দের। পূজা শুরু হওয়ার আগেই প্রতিমা দেখতে ভিড় জমেছে কলারোয়ার পালপাড়ার পূজা মন্ডপে। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা উপলক্ষ্যে ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরী করা হয়েছে কলারোয়া পৌরসদরের মুরারীকাটি পালপাড়া মন্ডপে। সোনালী রঙের ধান দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখে যেন মনে হচ্ছে সোনা দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। ছোট ছোট ধান বসানো হয়েছে প্রতিটি প্রতিমায় পুথির মতো করে।
ধানের প্রতিমা তৈরির কারিগর কলারোয়া পৌরসদরের পালপাড়া গ্রামের কাজল পাল জানান, ৪ জন প্রতিমা শিল্পী নিয়ে মাস খানেক সময় লেগেছে এই প্রতিমা তৈরি করতে। খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫হাজার টাকা। ধান লেগেছে ২০ কেজির মতো।
তিনি জানান, এই মন্ডপে দুর্গা, কার্তিক গনেশ, স্বরসতি, লক্ষ্মী, অসুরসহ অনুসাঙ্গিক প্রতিমা তৈরির জন্য প্রথমে কাঠ, বাঁশ ও বিচুলির ফ্রেম বা কাঠামো তৈরি করা হয়। পরে তাতে মাটি দিয়ে প্রতিমার আকৃতি আনা হয়। সেগুলো শুকিয়ে যাওয়া শুরু হলে মাটি নরম থাকতে প্রতিমাজুড়ে ধান বসিয়ে দেয়া হয়েছে। ধান এমন ভাবে বসানো হয়েছে যাতে দেখলে মনে হবে প্রতিমাগুলো ধান দিয়েই তৈরি। এগুলো শুকিয়ে যাওয়ার পর প্রতিমার কিছু কিছু অংশ বিভিন্ন রং স্প্রে করা হয়েছে।
আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা।
সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার ৭টি উপজেলায় ৬০৬টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। জেলার কলারোয়া উপজেলার ৪৮টি, তালা ১৯৬টি, সাতক্ষীরা সদর ১১২টি, আশাশুনি ১০৮টি, দেবহাটা ২১টি, কালিগঞ্জ ৫১টি ও শ্যামনগরের ৭০টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সাতক্ষীরা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ জানান, এ বছর জেলার ৭টি উপজেলায় মোট ৬০৬টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য মন্দিরে বিভিন্ন কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠকে আমরা বিভিন্ন দাবি করেছি।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার সদস্যরা ডিউটিতে থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে থাকবে পুলিশ। প্রত্যেক অফিসার বিভিন্ন থানায় বিভিন্ন পূজা মন্ডপগুলো পরিদর্শন করবে।’